ইসমাইল হোসেন বিপ্লব, কচুয়া : মো. মোস্তফা (৩৫) পেশায় একজন সাধারন কৃষক। তিনি ২০১৩ইং সালের শেষের দিকে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ওমান থেকে খালি হাতে দেশে ফিরে আসেন এবং পরের বছর নতুন সংসার পাতেন। তার সংসারে স্ত্রী ছাড়াও কায়েছ আহমেদ (৪) নামের একজন নতুন অতিথি রয়েছে। বর্তমানে তিনি দুটি কিডনী হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন।
মো. মোস্তফা কচুয়া উপজেলার ৪নং পালাখাল মডেল ইউনিয়ন সফিবাদ গ্রামের পাঠার বাড়ীর নীরিহ কৃষক আবুল হাশেমের ছেলে।
জানা গেছে, মো. মোস্তফার দু’টি কিডনী সম্পূর্ণ ভাবে বিকল হয়ে গেছে। অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করতে পারছে না।
তিনি জানান, আমি একজন গরীব ঘরের সন্তান। আমার বৃদ্ধ বাবা একজন কৃষক। সহায় সম্পত্তি বলতে কিছুই নেই। বসবাসের জন্য বাড়ীর একটু জায়গা থাকলেও একই ঘরে তিন ভাইয়ের স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস।
প্রায় আড়াই বছর আগে আমার কিডনী রোগ ধরা পরে। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে বিশেষষ্ণ ডাক্তার জানিয়েছেন, আমার দুটি কিডনী নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে আমার এ কষ্টের কথা কাউকে বলতেও পারছিনা, কোন কাজ কর্ম এবং ভালো ভাবে হাটা চলা ফেরা করতে পারছিনা।
এর পর থেকে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরি।
অবুঝ সন্তান কায়েস আহমেদ (৪) স্ত্রী ও বাবা মায়ের কথা চিন্তা করে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরি। অসহায় মো. মোস্তফা জানান, বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ২-৩ বার শরীরে ডায়ালেটিস করতে হয়। প্রতি বার ডায়ালেটিস করতে ঢাকার ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য ডায়ালেটিস সেন্টারে যেতে হয়। অন্যান্য খরচ ছাড়াই শুধুমাত্র ডাক্তার ও হাসপাতালের ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা দিতে হয়।
এমনি ভাবে প্রতি মাসের প্রতি সপ্তাহে ডায়ালেটিস করতে হয়। এখন আর অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। প্রত্যেক সপ্তাহে ডায়ালেটিস করতে না পারলে শরীলে পানি জমে, বুমি-বুমি ভাব হয়, প্রচন্ড কাশি বেড়ে যায়, খাবারে রুচি থাকে না। এছাড়া শারিরিক ভাবে সুস্থ্য থাকার জন্য প্রতি মাসে একবার শরীরে এ পজেটিব রক্ত দিতে হয়।
ইতিমধ্যে জমি জমা বিক্রি করে, দার-দেনা করে ও এলাকার মানুষের সহায়তা নিয়ে চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ করা হয়েছে। তাতেও কোন লাভ হয়নি, ডাক্তার জানিয়েছেন, একটি কিডনী হলেই আমি মোটামুটি সুস্থ হয়ে যেতাম। আর জন্য প্রায় ২০-২৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন।
অসহায় মোস্তফা আরো জানান, আমি পূর্বে বিদেশ করেছি। কখনো কোন কারনে কারো কাছে, হাত পাতিনি। আমার বাবা- ভাইরা অনেক গরীর, সহায় সম্পত্তি নেই, বিক্রি করে চিকিৎসা করার। কিন্তু জীবন যুদ্ধে আমি আর পারছি না। আমি সুন্দর পৃথিবীতে সবার মতো বাঁচতে চাই। আমাকে বাচাঁতে আপনারা, আপনাদের সন্তান, ভাই, বন্ধু হিসেবে প্লীজ একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।
তিনি বর্তমানে ঢাকা ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য ডায়ালেটিস সেন্টারের বিশেষষ্ণ ডাক্তার আছিয়া খানম ও ডাক্তার তছলিম আহমেদের তত্ত¡াধায়নে কচুয়ার সফিবাদ নিজ বাড়ীতে রয়েছেন। এদিকে দুটি কিডনীতে সমস্যা অসুস্থ মোস্তফার উন্নত চিকিৎসার্থে বাংলাদেশ সরকার, প্রশাসন, শিল্পপতি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও বৃত্তবানদের সার্বিক সহযোগীতা চেয়েছেন তার অসহায় পরিবার।