স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে ইসলামিয়া পরিবহন নামে একটি মালবাহী ট্রলারের ডাকাতির ঘটনা অবশেষে ফাঁস হয়েছে। ডাকাতের সাথে জড়িত ডলারের পাঁচজন সহ ৮ জনকে আটক করেছে বেলতলী নৌ পুলিশ।
মামলার সাক্ষীরাই হলো মূল আসামি ও বাদী হল মূল হোতা তা প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।
রবিবার দুপুরে বেলতলী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চোরাই মাল কিনার অপরাধে দাউদকান্দি থেকে তিনজনকে আটক করে। এছাড়া শনিবার মালবাহী টলার থেকে মাল পাচারের সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করেন।
ডাকাতির নাটক সাজিয়ে ইসলামিয়া পরিবহন ট্রলারের মালিক কাদির চিনি ও তেল আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে।
নদীতে নৌ ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের চোখে ধুলা দিতে ঘটনার মূল হোতা ইসলামিয়া পরিবহনের ট্রলার মালিক কাদির বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানা একটি মামলা করেন। সেই মামলার প্রেক্ষিতে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ বিষ্ণুপুর কানদী বাজার গোলাপ পাটোয়ারীর গোডাউন ও টলার মালিক মামলার বাদী কাদেরের বাড়ি থেকে ডাকাতি হওয়া ১৩৬ বস্তা চিনি উদ্ধার করে নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বেলতলী নৌ -পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর বাবর ঘটনাটি তদন্ত করে মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেয়। এ সময় সাক্ষীদের কথা গরমিল দেখে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসা করলে তারা এই চিনি ও তেল আত্মসাৎ এর ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে।
পরবর্তীতে সেই ডাকাতি মামলার সাক্ষী মকবুল গাইন, মোঃ হোসেন গাজী,মনির হোসেন, আবুল হোসেন, জয়নাল আবেদীনকে আটক করে।
ডাকাতি হওয়া তেল কিনে রাখার অভিযোগে পরবর্তীতে দাউদকান্দির আশিশ ভান্ডারের মালিক সহ তিনজনকে আটক করেছে নৌ পুলিশ।
এই ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর বাবর জানায়, আটকৃত আসামিদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে তারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। তাদের কাছ থেকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। মে মাসের ৭ তারিখ আদালতের রিমান্ড শুনানি করা হবে। এর সাথে যারা জড়িত রয়েছে সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, রুপগঞ্জ থানা রূপসী সিটি মেল থেকে ইসলামিয়া পরিবহন নামে ট্রলারটিতে চিনি ২৫৬০, ময়দা ৭২০, সয়াবিন ও পামওয়েল ৬৪৫ ড্রাম তেল খুলনা যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে মতলব উত্তর ষাটনল এলাকায় সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাত চক্ররা মালবাহী ট্রলারটি দাউদকান্দি এলাকায় নিয়ে ৩৬০ ড্রাম তেল প্রচার করে। পরবর্তীতে সেই ট্রলার সেখান থেকে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের লালপুর ও কানুদি এলাকায় এনে ৬৪০ বস্তা চিনি নামিয়ে রাখে।
ডাকাতি হওয়া ৪০ ড্রাম তেল দাউদকান্দি আশিশ ভান্ডার থেকে উদ্ধার করে দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশ।
বিষ্ণুপুর ২ নং ওয়ার্ডের ইদ্রিস বেপারী অভিযোগ করে বলেন, টলার মালিক বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কানুদি আজিজ ব্যাপারীর ছেলে কাদের বেপারী, শরীয়তপুর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের নাসির আখন্দের ছেলে আলমগীর আখন্দ ও কানুদি মিয়ার বাজারের মৃত মন্নান বেপারীর ছেলে গোলাপ পাটোয়ারী যৌথভাবে ট্রলার থেকে চিনি পাচার করে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। এছাড়া এই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত রয়েছে আজাদ পাটোয়ারী, সেলিম খান ও ইউপি মেম্বার।
তাদেরকে আটক করলেই প্রকৃত ডাকাতির ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।