চাঁদপুরে এমবিবিএস চিকিৎসক নাম নিয়ে বাণিজ্য, পল্লী চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্য

স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুরে এমবিবিএস ছাড়া নামের আগে ডাক্তার লেখা যাবে না নিয়ম থাকলেও মানছেন না এক শ্রেনীর পল্লী চিকিৎসক। তারা গ্রামঞ্চল কিংবা শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় নিজেদেরকে ডাক্তার বলে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলিয়ে যাচ্ছে। আরএমপি, ডিএমএফ ইত্যাদি তাদের নামের নিচে লেখা থাকলেও উপরে ডাক্তার বলে চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদের নিয়ন্ত্রণ করার কেউ না থাকায় প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে সেবা নিতে আসা গ্রামের সহজ সরল লোকজন। এর ফলে অনকে সময় জটিল সমস্যাও পড়তে হয়। তখন উপায় না পেয়ে রোগীকে আদামরা করে এমবিবিএস ডাক্তারের নিকট নিয়ে যান। এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।

পল্লী চিকিৎসকদের এমন দৌরাত্ম্য নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় বহু প্রতিবেদন হয়েছে। আবার অনেকে এসএসসি কিংবা অষ্টম শ্রেনী পাস করে এমবিবিএস বলে চালিয়ে যাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে ও অনুসন্ধা করে জানাগেছে, শুধুমাত্র পল্লী চিকিৎসরাই এমবিবিএস লিখে প্রতারণ করাছেন না। চাঁদপুর জেলা সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্যারামেডিকেল পাস করাদের দিয়ে এমবিবিএস বলে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অধিক মুনাফার লোভে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন এই ধরণের প্রতারণায় লীপ্ত। কারণ একজন এমবিসিএস ডাক্তার হাসপাতালে সার্বক্ষনিক চিকিৎসার জন্য রাখা হলে তাকে প্রতিমাসে বেতন দিতে হবে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত কয়েকবছর আগে জেলা সদরে হাসপাতালগুলোতে অভিযান করা হলেও এখন আর তেমন চোখে পড়ছে না।
অপরদিকে পল্লী চিকিৎসকরাই অধিকাংশ হাসপাতালের পার্টনার হিসেবে জড়িত। তাদেরকে নিয়মনীতির জন্য জানতে চাইলে রাজনৈতিক নেতাদের নাম বলে আর তাদেরকে দিয়ে ফোন করানো হয়। কোন সংবাদ কর্মী তাদের এসব অনিয়ম তুলে ধরার জন্য চেষ্টা করলেও চাপে পড়ে প্রতিবেদন করা বিরত থাকতে হয়।

চাঁদপুর শহরের বাগাদী রোডে গিয়ে দেখাগেলো “মেসার্স আল-কুদ্দুস ফার্মেসী”। ফার্মেসীর সামনে লেখা আছে এখানে ডায়াবেটিস, প্রেসার ও ওজন মাপা হয়। একজন ঔষধ বিক্রেতা পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজও করেন। আরেক স্থানে লিখা আছে কেমিস্ট মো. আলমগীর। কিন্তু একটু কৌশল করে আরেক স্থানে লেখা যোগাযোগ ডাক্তার মোবাইল এত নম্বর। প্রশ্ন হচ্ছে-এটি টিনের সেমিপাকা একটি দোকানঘর। পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়, কেমিস্ট লেখা নামের আগে, আবার ডাক্তারও লেখা আছে, কোনটা সঠিক। নাকি রোগীদের সাথে প্রতারণা করার কৌশল। এই প্রতিষ্ঠানের বৈধ ব্যবসা কোনটি।

সম্প্রতি হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা প‚র্ব বাজারে গিয়ে দেখাগেছে নাম লেখা “বাংলাদেশ ফার্মেসী”। এখানে যিনি কাজ করেন তিনি নাম লিখেছেন ডাঃ রাজেন্দ্র চন্দ্র রায় (রাজন)। তার ডিগ্রি হচ্ছে ডি.এম.এফ। রোগী দেখার সময় সকাল ৯টা থেকে দুপুর-১টা। বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা।

রাজনকে ডাক্তার কেন লিখেছেন এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি জানতামনা ডাক্তার লিখলে সমস্যা হয়। অনেকেইত ডাক্তার লিখেন।

তিনি তার এই ভুল লেখা সাইনবোর্ড দ্রæত পরিবর্তন করবেন বলে জানান। আরেক কেমিস্ট মো. আলমগীর এর মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেন নি।

এছাড়া চাঁদপুর সদর উপজেলার বাঘড়া বাজার কানু নামে পল্লী চিকিৎসক দীর্ঘদিন যাবৎ ডাক্তর লিখে নিয়মিত রোগী দেখছেন প্রেসক্রিপশন এর মধ্যমে। একই ভাবে রোগী দেখছেন সদরের চৌরাস্তা বাজারের কালা, (কালা ডাক্তার)। এছাড়া বাবুরহাট বাজারের পরিচিত জহল্লাল। তিনি বর্তমানে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যমে নিয়মিত রোগী দেখছেন ও প্রেসক্রিপশন দিচ্ছেন।

একই রকম খবর