গাজী মোঃ ইমাম হাসানঃ চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেছেন, এলজিএসপি প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করলে গ্রামীন অবকাঠামো ও জীবনমান উন্নত হবে।এলজিএসপির প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যেসব ইউনিয়ন ভাল দক্ষতা অর্জন করেছে তারাই সফল হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে চাঁদপুর জেলা অন্য জেলার তুলনায় ভাল। এই উদ্যোগের কারণে গ্রামাঞ্চলে অনেক উন্নয়ন কাজ দৃশ্যমান হয়েছে।
বিশেষ করে প্রকল্পে অংশগ্রহনকারীরা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত হয়েছেন। এর ফলে তাদের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে স্বচ্ছতা ও জবাব দিহিতা সহজ হচ্ছে।প্রতিটি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে করা হবে ।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ এর অগ্রগতি ও অর্জন অবহিতকরণ বিষয়ক জেলা পর্যায়ে দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক এলজিএসপি-৩ সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য অংশগ্রহনকারী সকলকে মতামত ও পরামর্শ দেয়ার জন্য আহবান জানান।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং পায়কট বাংলাদেশের সহযোগিতায় কর্মশালায় জনপ্রতিনিধি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জাতীয় ও স্থানীয় গনমাধ্যমের সাংবাদিক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিগণ এতে অংশগ্রহন করেন।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার চাঁদপুর এর উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি বক্তব্যে বলেন, এলজিএসপি-৩ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার তৃণমূল পর্যায়ের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ক্ষমতা বৃদ্ধি ও সম্পদের বরাদ্দ বৃদ্ধির নানামূলখী পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। সে আলোকে এখন ইউনিয়ন পরিষদগুলো সাধারণ মানুষের দৌড় গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, অনেক আগ থেকেই সরকারের যে কোন উন্নয়ন বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করে আসছে ইউনিয়ন পরিষদ। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ছিল ‘আমার গ্রাম আমার শহর’। সেই কাজটি বাস্তবায়ন করছে ইউনিয়ন পরিষদ। এছাড়াও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে শুরু থেকেই কাজ করছে ইউনিয়ন পরিষদ। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ডিজিটাল অনেক সেবা গ্রহণ করছে।
অনুষ্ঠানে এলজিএসপি-৩ সম্পর্কে বিস্তারিত প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন পায়কট বাংলাদেশের প্রতিনিধি মো. শামছুদোহা।
কর্মশালায় অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে এলজিএসপি-৩ এর কার্যক্রম প্রতিষ্ঠানিকীকরণ এবং টেকসইকরণের কৌশল এর উপর দলীয় আলোচনায় ৪টি দল ভাগ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বরাদ্দের সুষম বন্টন নিশ্চিতকরণে ভবিষ্যৎ করনীয় (পদ্মা দল), এলজিএসপি-৩ এর অর্জনসমূহ টেকসই ও প্রাতিষ্ঠানিককরণে ভবিষ্যৎ করণীয় (মেঘনা দল), প্রকল্পের অর্জনসূমহ টেকসই ও প্রাতিষ্ঠানিককরণে চ্যালেঞ্জসমূহ (যমুনা দল) এবং নারীর ক্ষমতায়নে প্রকল্পের অর্জন সম্পর্কে (ব্রহ্মপুত্র দল) ৩০ মিনিটের মধ্য গুরুত্বপূর্ণ মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন। এসব মতামত ও পরামর্শ পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলো চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাবেক সভাপতি শরীফ চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি রহিম বাদশা, সহসভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী, সহসভাপতি লক্ষণ চন্দ্র সুত্রধর,দৈনিক চাঁদপুর সংবাদের সম্পাদক আব্দুর রহমান,দৈনিক প্রভাতী কাগজের সম্পাদক আব্দুল আউয়াল রুবেল,বাগাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বেলায়েত হোসেন বিল্লাল, রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আল মামুন পাটোয়ারীসহ সাংবাদিক ,সুধীজন ,জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা।
কর্মশালায় জানানো হয়-এলজিএসপি-৩ প্রকল্প ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারিতে শুরু হয় এবং ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। চাঁদপুর জেলায় ইতোমধ্যে ৪ হাজার ৫শ’ ২০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। বাস্তবায়নকৃত প্রকল্পের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাগামগত উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা, কমিউনিটি ক্লিনিক সংস্কার, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপরকরণ সরবরাহ, গণসৌচাগার নির্মাণ, গভীর ও অগভীর নলকূপ স্থাপন, ঘাটলা নির্মাণ, সেচ ড্রেন নির্মাণ, বাজারের গলি পাকাকরণ, বাজারের শেড নির্মাণ, বৃক্ষরোপন, রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ, খাল খনন, ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রে কম্পিউটার সামগ্রী সরবরাহ ও নারীদের সেলাই মেশিন সরবরাহ করা হয়।