চাঁদপুরে ডিম ওয়ালা মাছ ও রেনু পোনা নিধনে হুমকির মুখে মৎস্য সম্পদ

মাসুদ হোসেন : মৎস্য সংরক্ষণ আইনে মাছের প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ও পোনা মাছ ধরা এবং বাজারে বিক্রি করা নিষিদ্ধ হলেও চাঁদপুরের বিভিন্ন এলাকার নদী কিংবা খাল বিলে চলছে ডিম ওয়ালা মাছ ও রেনু পোনা নিধনের মহোৎসব। অতি বৃষ্টি ও জোয়ারে নতুন পানি বাড়তে থাকায় জেলার আট উপজেলার সকল খাল, বিল ও নদীতে রেনু পোনা সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করছে অসাধু জেলেরা।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নগুলোতে প্রকাশ্যে বিভিন্ন নদী, খাল বিলে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রতিদিন প্রকাশ্যে ভেলাস (ভেল জাল) ও কারেন্ট জাল ফেলে ডিমওয়ালা মা ও পোনা মাছ নিধন করছে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় এসব দেখার যেন কেউ নেই? অবাধে ডিমওয়ালা মা ও পোনা মাছ নিধনের ফলে দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ হারিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আগামীতে খাল বিল ও নদ নদীতে মাছের বংশ বৃদ্ধি শূন্যের কোঠায় এসে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা করছে সচেতনরা।

ডিমওয়ালা মাছ ও রেনু পোনা রক্ষায় যদিও বর্তমান সরকার জেলেদের বিভিন্ন ভাতা দিয়ে আসছে তবুও খাল বিলে নতুন পানি আসার সাথে সাথে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে ও সৌখিন মৎস্য শিকারি নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, মশারি জাল ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে রেনু পোনা, পোনা মাছ ও কারেন্ট জাল দিয়ে ডিমওয়ালা মাছ সংগ্রহে নেমে পড়েছে। এসব আবার প্রকাশ্যে বিভিন্ন হাট-বাজারের আড়তে পাইকারি ক্রয়-বিক্রয় চলছে। এতে মাছের মৌসুমেও এ অঞ্চলে দেখা দিয়েছে মৎস্য সংকট। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে মাছের অভাবে মানুষের শরীরে দেখা দিবে আমিষের অভাবসহ নানা ধরনের অসুখ।

এ জেলায় মৎস্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় বেপরোয়াভাবে নিধন করা হচ্ছে মা ও রেনু মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। এতে করে দেশীয় প্রজাতির প্রাকৃতিক মাছগুলো এ অঞ্চল থেকে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে সচেতনদের ভাষ্যমতে জেলার সকল ইউপি সদস্য থেকে শুরু করে সকল জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা যদি সঠিক প্রদক্ষেপ নেন, তাহলে আমাদের দেশে দেশীয় মাছের সংকট পড়বে না বলে ধারনা করছেন। এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম চিনতে পারবে দেশীয় মাছগুলোকে। শাহমাহমুদপুর, উপাদী দক্ষিণ, রামপুর ইউনিয়ন ও বাকিলা ইউনিয়ন ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। যদি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা এসব অবৈধপন্থায় ডিমওয়ালা মাছ ও রেনু পোনা নিধনে ভূমিকা রাখেন তাহলে বর্ষায় আমাদের অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকার মৎস্য ঘাটতি দেখা দিবে না।

এ ব্যাপারে মহামায়া বাজারের ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন কুসুম জানান, স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপেই এসব ডিমওয়ালা মাছ ও রেনু পোনা নিধন সম্ভব। যদি তারা একটু সচেতনতার পরিচয় দেন। কারন ঐ অসাধু জেলেদের তারা চেনেন জানেন।

এব্যাপেরা ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন মাহমুদ জানান, ডিমওয়ালা মাছ ও রেনু পোনা ধরা নিষিদ্ধ হলেও বিভিন্ন এলাকা অসাধু জেলেরা তা ধরছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মাঝে মধ্যে ভেলাস জাল ও কারেন্ট জালের উপর অভিযান পরিচালনা হলেও অসাধু জেলেরা তা পুনরায় ডিমওয়ালা মাছ ও রেনু পোনা ধরছে।

উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা পেলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ডিমওয়ালা মাছ ও রেনু পোনা নিধন বন্ধে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।

একই রকম খবর

Leave a Comment