চাঁদপুরে নজরুলের জন্মজয়ন্তীতে আলোচনা ও কবিতাপাঠ

স্টাফ রিপোর্টার : ‘বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আজও দ্রোহে ও দেশপ্রেমে নজরুল সমুজ্জল’ এই পতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে কবিতার কাগজ তরী’র আয়োজনে ‘বাঙালি জীবনে অসাম্প্রদায়িক নজরুল’ শীর্ষক আলোচনা ও কবিতা পাঠ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৯ মে মঙ্গলবার সাহিত্য একাডেমী চাঁদপুর মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে নজরুলের সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা রাখেন বিশিষ্ট গল্পকার ও চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মঈনুল হাসান, সাহিত্য একাডেমী চাঁদপুর এর মহাপরিচালক কাজী শাহাদাত, বিশিষ্ট লোক-গবেষক প্রকৌ. মো. দেলেয়ার হোসেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির, বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী ও নজরুল সঙ্গীতশিল্পী পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি রুপালী চম্পক, আনন্দধ্বনি সঙ্গীত শিক্ষায়তনের অধ্যক্ষ রফিক আহমেদ মিন্টু। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও নজরুল সঙ্গীতশিল্পী পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরী।

কবিতার কাগজ তরী’র প্রধান উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট লেখক ডা. পীযূষ কান্তি বড়–য়ার সভাপতিত্বে ও তরী’র নির্বাহী সম্পাদক মাইনুল ইসলাম মানিক এবং সম্পাদক আশিক বিন রহিম এর যৌথ সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি গীতিকবি পীযূষ কান্তি রায় চৌধুরী, আঙন সম্পাদক ম. নূরে আলম পাটওয়ারী, ছড়াকার খান-ই আজম, কবি ও প্রভাষক শাকিবুল ইসলাম।

এছাড়াও নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন আনন্দধ্বনির শিল্পী চয়ন সাহা, সিঁদুর ভৌমিক, স্বর্ণালী দাস এবং কবিতা আবৃত্তি করেন আবু বকর সিদ্দিক।

আলোচকদের বক্তব্যে উঠে আসে নজরুলের জীবন, সাহিত্য ও সংগীত সম্পর্কিত বিচিত্র ধরনের অভিজ্ঞতার কথা।

এসময় বিশিষ্ট গল্পকার ও চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা ) মঈনুল হাসান, চাঁদপুরে কাজী নজরুল ইসলাম এসেছিলেন। কবির স্মৃতির প্রতি সন্মান জানিয়ে একটি সড়কের নাম কাজী নজরুল ইসলাম সড়ক করা হয়েছে। আমার বাংলোটি সেই সড়কে অবস্থিত হওয়ায় আমি ভিন্ন ধরনের অনুভূতি অনুভব করি। চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সামনে একটি ফলকে চাঁদপুরে নজরুলের আগমন বিষয়ে কিছু লেখা রয়েছে। আমি চলার পথে প্রায় সেটি পড়ি।

তিনি আরো বলেন, নজরুল ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শক্তিমান বাঙালি কবি। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং একজন দার্শনিক ছিলেন। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। নজরুলের কবিতার মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ লক্ষ্য করা যায়।

অন্যান্য আলোচকগণ বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম তিন হাজারেরও বেশি গান রচনা করেছেন। তার গানের বাণী সুরবৈচিত্রে বাংলা গানের ভুবনকে সমৃদ্ধ করেছে। নজরুল পৃথিবীতে বিরল প্রতিভার নাম, যার সৃষ্টিকর্ম একাধারে মসজিদ ও মন্দিরে প্রার্থনা সঙ্গীত হিসেবে মানুষ গ্রহণ করেছে। তিনি ইসলামী গজল লেখার পাশাপাশি অসংখ্য শ্যামা সঙ্গীত রচনা করে গেছেন। তাই আমরা মনে করি নজরুলের তুলনা শুধু নজরুল নিজে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বপন ভঞ্জ, দৈনিক মতলবের আলো পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কেএম মাসুদ, চাঁদপুর লেখক পরিষদের আহবায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন, শিক্ষিকা শুকলা ভৌমিক, স্বরলিপি নাট্যদলের সভাপতি এম আর ইসলাম বাবু, সাংবাদিক শেখ আল মামুন, সঙ্গীত শিক্ষক বীরেন সাহা, কবি আলিজা হোসেন, আসাদুল্লা কাহাফ, কাজী সাইফ, প্রভাষক ফয়েজ আহমদ, প্রভাষক মাহমুদ আলম লিটন, ওমর ফারুক প্রিন্স, ফয়সাল মৃধা, মারিয়া ফারজানা, অরুপ বণিক, আনিস আরমান, সজীব দাস, শামীম হোসেন, আজহারুল ইসলাম, নাফিজ হাসান, রিয়াদ হোসেন, নাহিদ হোসেন, নাফিস ইকবাল, তাসফিয়া আক্তার ছোঁয়া, আবদুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, ফাইয়াজ হোসেন, আবদুর রহমান সাকিব, মানুফ হোসেন প্রাপ্ত, নূহাদ হোসেন, নাসির হোসেন, সাবিক আল হাসান, শাওন হোসেন, মারুফ হোসেন, শাকিল হোসেন, জাকির হোসেন বিএসসি, আল আমিন।

আলোচনা শেষে ইফতারপূর্বক দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ফরিদগঞ্জ গাজীপুর আহমাদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক মাওলানা আবদুল মমিন। আলোচনা শেষে তরী পরিবারের পক্ষ থেকে ইফতার পরিবেশন করা হয়।

আয়োজনের সার্বিক তত্ত¡বধায়নে ছিলেন কবি ও গল্পকার রফিকুজ্জামান রণি, মনের জানালার সম্পাদক গীতিকবি কবির হোসেন মিজি, কবিতার কাগজ তরী’র সহযোগী সম্পাদক পাটওয়ারী লিটন।

একই রকম খবর

Leave a Comment