চাঁদপুরে নদী কেন্দ্রিক এলাকা পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক

চাঁদপুর খবর রিপোর্ট : চাঁদপুরে ঘূর্ণিঝড় “বুলবুল” কে কেন্দ্র করে বৃষ্টির প্রকোপ বাড়ায় সীমিত হয়ে আসছে যান চলাচল। চাঁদপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ওয়ারলাছ সুপার ভাইজার (ভারপ্রাপ্ত) শাহ মাহমুদ শোয়েব জানান,  এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের ঝড়ের সতর্কবার্তা হিসেবে চাঁদপুরে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে।যে জন্য বুলবুল এখানে ১’শ থেকে ১’শ ২০ কি.মি. বেগে আঘাত আনার সম্ভাবনা রয়েছে। যা চরাঞ্চল এলাকায় নদীর পানি ৫-৭ মিলিমিটার উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়ে ক্ষতির মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

এদিকে ঘূর্র্ণিঝড় বুলবুল আঘাত হানার সময় যতই ঘনিয়ে আসছে। চাঁদপুরের উপকূলের পরিবেশ ততই খারাপের দিকে যাচ্ছে। তাই জেলার অনেক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিচ্ছে। এদিকে ৯ নভেম্বর শনিবার মানুষকে সচেতন করতে এবং নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে সকালেই নদী কেন্দ্রিক এলাকাগুলোতে পরিদর্শন করেন ও নিরাপদে সরে যেতে মানুষদেরকে সচেতন করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান।

তিনি সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে নদী তীরবর্তী মানুষদের আশ্রয়নে যেতে উৎসাহিত করছেন। অপর দিকে জেলার সার্বিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত শুক্রবার রাতে এক জরুরি সভা করেছেন। সভায় তিনি জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের প্রত্যেকের প্রস্তুত থাকতে হবে। যে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তা ছুটিতে আছেন তাদেরকে অবিলম্বে স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদিতে বলা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় ৫৮টি মেডিকেল টিম, স্থানীয় স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও প্রস্তুত রয়েছেন। সেই সাথে সকল মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার ও বলগেট এবং ড্রেজারসহ ইত্যাদি ছোট নৌ-যানগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। বিভিন্ন চরাঞ্চলে মাইকিং করে প্রচারণা চালানো অব্যাহত রাখা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, বুলবুলে জরুরি অবস্থা মোকাবেলা করার জন্য আমরা ১’শ ৮৪ মেট্টিক টন চাল, নগদ ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, ৭’শ ৩৬ ব্যান্ডেল টিন ও ব্যান্ডেল প্রতি টিনের সাথে আরো নগদ ৩ হাজার টাকা করে মজুদ রাখেছি। বৃষ্টি উপেক্ষা করে এখনো মাইকিং চালানো হচ্ছে। সেই সাথে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

এদিকে সকাল হতে থেমে থেমে বৃষ্টি পরলেও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে বৃষ্টির মাত্রা। যে জন্য অভ্যান্তরীন রুটে সকালে কিছু বাস ছেড়ে গেলেও অধিকাংশ বাস টার্মিনালেই থেকে গেছে। শহরে চলমান ক্ষুদ্র যানবাহগুলো চলাচল করছে অত্যান্ত সীমিত। তেমনভাবে রিকশা চলাচলও করছে না এবং বন্ধ রয়েছে লঞ্চগুলোও। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোবাইক, সিএনজি চালিত স্কুটার ও কিছু সরকারি গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে ভাড়া পূর্ব নির্ধারিত মূল্যেই রাখা হচ্ছে।

এদিকে মানুষকে সচেতন করতে এবং নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নদী কেন্দ্রিক এলাকাগুলোতে পরিদর্শন করেন ও মানুষদেরকে সচেতন করতে হরিণা ফেরী ঘাটসহ নদীর পাড় পরিদর্শনে যান চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ জামান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ জামাল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা।

একই রকম খবর