স্টাফ রিপোর্টার : বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছে চাঁদপুরের গ্রাহকরা। কখনো মিটার লক হওয়া, কখনো মিটারে টাকা রি-চার্জ করতে গিয়ে পূর্ববতী বিল নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পুরনো বিল পরিশোধ করেও দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। সাধারণ গ্রাহকদের পাশাপাশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে সরকারি দপ্তরও।
বিশেষ করে বিএডিসি ( সেচ) অফিসে ৪ লক্ষাধিক টাকার ভুতুড়ে বিল বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সরকার গ্রাহকদের সুবিধার্থে চাঁদপুর পৌর এলাকায় প্রিপেইড মিটারের আওতায় এনেছে। ইতিমধ্যে ৫৮ সহ¯্রাধিক গ্রাহকের মধ্যে ৪৯ সহ¯্রাধিক গ্রাহক প্রিপেইড এর আওতায় এসেছে। অনেক সরকারি অফিসসহ এখনও সাড়ে ৮ হাজার গ্রাহক প্রিপেইডের আওতায় আসেনি। যেসব গ্রাহক প্রেপেইডের আওতায় এসেছে, তারা এখন নানা সমস্যায় ভুগছে। ভ‚তড়ে বিল আর মিটারের বিভিন্ন জটিলতায় গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত বিল। এ ক্ষেত্রে সরকারি অফিসও রেহাই পাচ্ছে না।
অভিযোগ এসেছে চাঁদপুর বিএডিসি’র সহকারী প্রকৌশলী (সেচ) কার্যালয়ে ভূতড়ে বিল পরিশোধ করতে গিয়ে তারা হিমশীম খাচ্ছে। সকল বকেয়া বিল পরিশোধ করার পরও ১৬ জুন আবার নতুন করে বিদ্যুৎ অফিস তাদের ৪ লাখ ১৭ হাজার ৬শ’ ৭৮ টাকা ভ‚তড়ে বিল দিয়ে পরিশোধের তাগিদ পত্র দিয়েছেন।
এমনি বাসা-বাড়িতেও অভিযোগ আর অভিযোগ। তবে বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছেন, বিএডিসি’র অফিসের বিলটি ভুল হয়েছে। আর এখন অভিযোগের সংখ্যা অনেক কম। সাধারণ জনগণ মনে করেন ভ‚তড়ে বিল নিয়ে আমরা সীমাহীন দুর্ভোগে রয়েছি। দেখা যাচ্ছে, মিটার না ধরেও মিটার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে মিটার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
আর এ জন্য উপায়ন্তর না পেরে খাতওয়ারী জরিমানা বা টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ অবস্থা চললে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমপুঞ্জিভ‚ত হয়ে উঠবে।
বিএডিসি’র চাঁদপুর জোনের সহকারী প্রকৌশলী মো. এরশাদ উল্ল্যাহ অভিযোগ করেছেন, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ অনুমতি ছাড়াই তাদের এনালগ মিটার পরিবর্তন করে প্রিপেইড মিটার স্থাপন করেছে। এনালগ মিটারের অধিনে পূর্বে বকেয়া বিল ৩৯ হাজার ৭শ’ ৭১ টাকা বকেয়া আছে বলে বিদ্যুৎ অফিস থেকে জানানো হয়। যা ২০১৮সালের ৩০ জুন চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। ২০১৮সালের ২৭ জুন নিজস্ব অফিস থেকে ৪৮ হাজার ৫শ’ টাকা প্রেইড মিটারে রিসার্জ করা হয়। ২০১৯সালের ৭ই মার্চ প্রিপেইড মিটারে নতুন করে টাকা রিসার্জ করতে গেলে মিটার বন্ধ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে বিদ্যুৎ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলীর এক পত্রে জানানো হয় এনালগের মিটারে ১ লাখ ৭০ হাজার ৯শ’ ৫০ টাকা পূর্বের বকেয়া আছে। এর ব্যাখ্যা আমরা বিদ্যুৎ অফিসের কাছে লিখিতভাবে চাইলে তারা জবাব দিতে ব্যর্থ হয়।
এ প্রেক্ষাপটে আমরা পূর্বের বকেয়া বিল ৩৯ হাজার ৭শ’ ৭১ টাকা পরিশোধ করেছি প্রমাণ দেখালে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ওই টাকা বাদ দিয়ে আমাদেরকে ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল পুণরায় সর্বশেষ ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭শ’ ৩৬ টাকা বকেয়া পরিশোধের জন্য পত্র দেন। ২০১৯সালের ৭ মে চেকের মাধ্যমে আমরা উক্ত টাকা পরিশোধ করি এবং ওই দিন ১০ হাজার টাকা প্রিপেইড মিটারে রিসার্জ করি। এ রিসার্জ করার পর ১০ হাজার টাকা থেকে বিভিন্ন চার্জ ৮ হাজার ১শ’ ৭৬ টাকা কর্তন করা হয়।
আর ব্যবহারের জন্য পাওয়া যায় ১৮৯০ টাকা। আশ্চার্য্য হলে শর্ত যে, এতোসব বকেয়া বিল পরিশোধ করার পর ২০১৯ সালের ১৬জুন আবারো বিদ্যুৎ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী কর্তৃক বিএডিসিকে পত্র দেয়া হয়, ৪ লাখ ১৭ হাজার ৬শ’ ৭৮ টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার জন্য। যা ভ‚তুড়ে বিল বলে প্রমাণিত হয়।
এভাবে একটি সরকারি অফিসে যদি বিদ্যুৎ অফিস এ ধরনের আচরন করে তাহলে সাধারণ গ্রাহকদের অবস্থা কি? তা বলার অপেক্ষা থাকে না। চাঁদপুর বিদ্যু’ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) এস.এম ইকবাল জানিয়েছেন, বিএডিসি’র অভিযোগ এসেছে, তারা প্রিপেইড মিটারটি যথা সময়ে স্থাপন করতে দিলে এ সমস্যা পড়তে হতো না।
কাজই বিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারনেই এ সমস্যা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা প্রিপেইড মিটার ৫ মাস পর স্থাপন করেছে। ৫ মাস বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার কারনে একত্রে জুন মাসে এত বড় অঙ্কের বিল এসেছে। আর অতি সম্প্রতি তাদেরকে একটি নোটিশ দিয়েছিলাম বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য, কিন্তু নোটিশটি মিসটেক হয়েছে। অর্থাৎ সঠিক নয়।