চাঁদপুরে ১ আগষ্ট চালু হতে যাচ্ছে লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট

শওকত আলী /সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী : জেলা চাঁদপুরকে করোনাভাইরাস উচ্চ সংক্রমণ এলাকা হিসেবে চিহিৃত করেছে চাঁদপুরের প্রশাসন ও চাঁদপুর স্বাস্থ্য বিভাগ । এতে করে করোনা রুগীদের অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে।

কুমিল্লা থেকে প্রায় প্রতিদিনই চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন আনতে অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। যার কারণে, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলি লিটারের লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্টের উৎপাদন করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

এ অক্সিজেন প্লান্ট স্থায়ীভাবে বসানোর মাধ্যমে চিকিৎসা ক্ষেত্রে পুরো এগিয়ে গেলো চাঁদপুর। আর এ কাজটি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির বদান্যতায় সম্ভব হচ্ছে বলে মনে করেন চাঁদপুরের সচেতন মহল ও জেলাবাসী। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির জনহিতকর কাজের আরো একটি দৃষ্টান্ত হচ্ছে,চাঁদপুরে লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন।

চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গে ভর্তি রোগীদের অক্সিজেন সেবা নিশ্চিত করতে ১ আগস্ট থেকে চালু হতে যাচ্ছে লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্টটি।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হাবিব উল করিম এর সত্যতা নিশ্চিত করে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হাবিব উল করিম বলেন, ‘প্ল্যান্টের চিফ টেকনিক্যাল অফিসার সোহরাব উদ্দিন জানিয়েছেন সব কিছু ঠিক থাকলে ১ আগস্ট থেকে আমরা লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট উদ্বোধন করতে পারবো। মূল প্ল্যান্টটিতে তৈরি হবে ছয় হাজার লিটারের অক্সিজেন গ্যাস। যা অক্সিজেনে রূপান্তর হয়ে ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলিলিটারে দাঁড়াবে।‘

সিভিল সার্জন বলেন, ‘এই লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট চালু হলে শুধু চাঁদপুর নয় আশপাশের জেলার রোগীরাও এর সুবিধা নিতে পারবেন। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ৩৯৭ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬৫ জন।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্ল্যান্টটি বসানোর কাজে অর্থায়ন করছেন ইউনাইটেড ন্যাশন ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন্স ইমার্জেন্সি ফান্ড (ইউনিসেফ) এবং বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

প্ল্যান্ট বসানোর কাজে নিয়োজিত প্রকৌশলী কামাল হোসেন বলেন, চাঁদপুরসহ দেশের প্রায় ৩০টি জেলায় ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলি লিটারের ধারণ ক্ষমতার লিকুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর পর এখন উৎপাদনে যাওয়ার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মূল প্ল্যান্টি হচ্ছে ৬ হাজার লিটারের। এটি যখন অক্সিজেনে রূপান্তর হয় তখন ৫১ লাখ ৬০ হাজার মিলি লিটারে রূপান্তর হয়। এটি চালু হলে চাঁদপুরের চাহিদা অনুযায়ী যে কোন সময় লিকুইড অক্সিজেন পাওয়া যাবে। তিনি আরো বলেন, এই প্ল্যান্ট স্থাপনের সময়সীমা লেগেছে প্রায় ৯০দিন।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মো. হাবিব উল করিম বলেন, অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন ও এটি উৎপাদনে যাচ্ছে,তা’ চাঁদপুরবাসীর জন্য একটি সুখবর। বর্তমানে আমরা কুমিল্লা থেকে চাঁদপুরে চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন আনতে হচ্ছে। তাতে ভোগান্তি হতে হচ্ছে, বিড়ম্বনা পোহাতে হয় বেশী এবং তার মধ্যে আবার খরচ ও বেশী হয় । লিকুইড প্ল্যান্টি স্থাপন হয়ে এখন চালু হলে আমাদের জেলার বর্তমান চাহিদা পুরন করে এবং ৪-৫ মাসের অক্সিজেন মওজুদ থাকবে। এছাড়াও এখান থেকে অন্য জেলায় অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এতে করে চাঁদপুর জেলাবাসী যেমন উপকৃত হবে। তেমনি পার্শ্ববর্তী অন্য জেলাও এখান থেকে উপকার ভোগ করতে পারবে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতি ১ম ধাপের শুরুতে চাঁদপুরের করোনায় আক্রান্তদের অক্সিজেন সমস্যার প্রকট আকার ধারণ করলে তখন চাঁদপুর-৩ আসনের তিন তিনবারের নির্বাচিত সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সংযোজনের ব্যবস্থা করে দেন।

এছাড়া করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্যে হাসপাতালে চিকিৎসায় প্রথমে ২৫ বেড পরবর্তীতে যা ৩০ বেডের আইসোলোশন বিভাগের ব্যবস্থা করা হয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এ ভাইরাসে আক্রান্তদের শনাক্তকরণে প্রথমদিকে সময় লাগতো ৮/১০ দিন। এই রিপোর্টে ঢাকা থেকে আসত। সেটিও তিনি সমাধানের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে তিনি এবং তাঁর ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপু ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের মাধ্যমে করে ফেলেন। চাঁদপুরে স্থাপন করা কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষাগার (আরটিপিসিআর ল্যাব)।

এরপর অধিক আক্রান্ত রোগীদের অতিরিক্ত অক্সিজেন ও আইসিইউও বেডের প্রয়োজন হয়। এর জন্যে ইতিমধ্যে ৩টি আইসিইউও বেড অনুমোদনের ব্যবস্থা করে স্থাপন করেন। সর্বশেষ অক্সিজেন প্লান্ট স্থায়ীভাবে বসানোর মাধ্যমে চিকিৎসা ক্ষেত্রে পুরো এগিয়ে গেলো চাঁদপুর। এটি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির বদান্যতায় সম্ভব হচ্ছে বলে মনে করেন জেলাবাসী।

একই রকম খবর