চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর গ্রাহক প্রায় ৪ লক্ষ

স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর গ্রাহক প্রায় ৪ লক্ষ।তবুও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক লোড শেডিং শূণ্যের কোটায় নামানোর চেষ্টা চলছে।১৮ নভেম্বর রবিবার এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু তাহের।

তিনি জানান, ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর আমার যোগদানের মূহুর্তে এখানে মোট গ্রাহক ছিলো ১ লক্ষ ৬২ হাজার।কিন্তু সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বর্তমানে গ্রাহক বহুগুণ বেড়েছে।অক্টোবর ২০১৯ এর হিসাব মতে এখানে মোট গ্রাহক ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ৫’শ ৮০ জন।যার মধ্যে আবাসিক ৩ লক্ষ ৩৮ হাজার ৯’শ ৮২ জন এবং বাণিজ্যিক ২৯ হাজার ৭’শ ৪৩ জন।

তিনি জানান,আমাদের আওতায় রয়েছে মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, ফরিদগঞ্জ, হাইমচর ও চাঁদপুর সদর(পৌর এলাকা ব্যাতীত)।যার মধ্যে চাঁদপুর সদর, হাইমচর ও মতলব দক্ষিণে আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করেছি।শুধু তাই নয় ফরিদগঞ্জেও শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিতের জন্য আমরা প্রায় ৯৭% কাজ শেষ করেছি।সেখানে শতভাগ নিশ্চিত করেই আমরা মতলব উত্তরের শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে জোরকদমে কাজ শুরু করবো।

চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর এক তথ্যে দেখা যায়,আবাসিক ও বাণিজ্যিকের পাশাপাশি এখানে সেচ হিসেবে ৫’শ ২৯,শিল্পে ১৫’শ ৭৮,বৃহৎ শিল্পে ৪৩,দাতব্য প্রতিষ্ঠানে ৫হাজার ৩’শ ৩৭ জন ও অস্থায়ী ১১টি গ্রাহক রয়েছে।এসবের আলোকে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জিএম মোহাম্মদ আবু তাহের জানান,আমাদের মোট ৫ হাজার ২’শ কিলোমিটার জুড়ে ৭’শ ৪৯ টি গ্রাম বিদ্যুৎের আওতায় রয়েছে।

যাদেরকে (৩৩ কেবি’র) ৮টি সাব-স্টেশনের বিতরণকৃত ১৩ হাজার ট্রান্সফরমার ও প্রায় ৮৫ হাজার বৈদ্যুতিক পোলের(খুঁটি) মাধ্যমে বিদ্যুৎ সেবা দেওয়া হচ্ছে।আর এসব পোলে ৩’শ ৫টি বৈদ্যুৎিক বাতি রয়েছে।শুধু তাই নয় হাইমচরের দুর্গম চরএলাকাতেও বিদ্যুৎ সরবরাহ পৌঁছাতে ১০ এমবিএ জমি ভূমি অধিগ্রহণ করে কাজ শুরু করা হয়েছে।

লোডশেডিং কেন হচ্ছে? এমন ব্যাখ্যা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন,বৈদ্যুতিক লাইন সচল রাখতে প্রায়ই রাস্তার পাশের গাছ কাটতে হয়।তাছাড়াও ট্রান্সফরমার বা লাইন রিপেয়ারিং এর কোন কোন সময় বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রাখতে হয়।তবে আমরা গ্রাহকের বিদ্যুৎ সেবার লোডশেডিং এর ভোগান্তি শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনতে কাজ করছি।তিনি জানান, চরাঞ্চল ব্যাতীত আমাদের মোট গ্রাহকের প্রায় ৯৫%-ই প্রি-পেইড মিটার গ্রাহক।

সেই সাথে আমাদের পিবিএসএর প্রধান গ্রাহক হচ্ছে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প ও মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প।যাদেরকে সাফল্যের সহিত সেবা নিশ্চিত করে আমরা অন্যান্য ক্ষেত্রেও লোডশেডিং শূণ্যের কোটায় নামানোর ব্যবস্থা করছি।

নতুন সংযোগ নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান,যে কোন গ্রাহক অনলাইনে আবেদন করেও নতুন সংযোগ পেতে পারেন।সেক্ষেত্রে আবাসিক গ্রাহক ৭দিন এবং শিল্পের গ্রাহক ২৮ দিনের মধ্যে সংযোগ পাওয়ার নিয়ম রয়েছে।তবে আবাসিকের জন্য আবেদন করা কোন গ্রাহকের ঘর ওয়েরিং করা থেকে থাকে।তাকে আমরা ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ কর্মসূচির আওতায় মাত্র ৪’শ ৬৫ টাকা পরিশোধ নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করি।

এদিকে বিদ্যুৎের লোডশেডিং বন্ধে সরকার কাজ করছে জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক পদপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ শওকত ওসমান জানান, চরাঞ্চাল ব্যাতীত চাঁদপুরের প্রায় সব জায়গায় শতভাগ বিদ্যুৎায়ন করা হচ্ছে।ফরিদগঞ্জেও শতভাগ বিদ্যুৎায়নের প্রায় ৯৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে।গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎের সাব-স্টেশনগুলো সংস্কার করে লোড ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।বিদ্যুৎের সেবা সংক্রান্ত সব রকম সেবা পেতে সরকারের “আলোর ফেরিওয়ালা” নামের কর্মসূচী চালু রয়েছে।যার মাধ্যমে বিভিন্ন সভা-সমাবেশের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সম্পর্কিত তথ্য সেবা দেওয়া হয়।সুতরাং বলতে চাই অতীতের চেয়ে বর্তমানে চাঁদপুরে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা অনেক উন্নত।

একই রকম খবর