চাঁদপুর লঞ্চ ঘাট থেকে ধারণ ক্ষমতার ৩ গুন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছাড়ছে লঞ্চ

মনিরুজ্জামান বাবলু : পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য ঈদের ৫দিন পরও ধারণ ক্ষমতার ৩ গুন যাত্রী নিয়ে লঞ্চ গুলো যাত্রীদের নিরাপত্তার দিক চিন্তা না করে নিজেদের ইচ্ছা মত ওভার লোড করে যাত্রী নিয়ে ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করছে।

এতে করে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যাত্রীদের প্রান হানীর সম্বাবনা বিরাজ করছে। চাঁদপুর থেকে ঢাকাগামী লঞ্চগুলোতে উপচেপড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে। এতে যেমন দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে, তেমনি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিশু ও নারী যাত্রীদের।

ঈদের পর রোববার (৯ জুন) থেকে যাত্রী বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। সোমবার (১০ জুন) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রতিটি লঞ্চ তাদের ৮/৯শ” যাত্রী ধারণ ক্ষমতা থাকলেও তারা ৩ গুন যাত্রী অর্থাৎ আড়াই হাজার হতে শুরু করে ৩ হাজার পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাওয়ার জন্য চাঁদপুর নৌ-টার্মিনাল ত্যাগ করছে বলে অভিযোগ করে জানিয়েছেন, চাঁদপুর কোস্টগার্ডের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো: মাইনুল ইসলামসহ কোস্ট গার্ডের সদস্যরা।

এ ছাড়া রোববার রাত ১২টা ১৫ মিনিটে চাঁদপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চ এমভি ময়ুর-৭ অতিরিক্ত যাত্রীর কারনে রাত ১১টায় ধারণ ক্ষমতার ৩ গুন যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর নৌ-টামিনাল ত্যাগ করে।

এদিকে চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে কর্মরত নামপ্রকাশ না করা সত্বেও একাধিক লঞ্চ সুভার ভাইজার জানান, সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রতিটি লঞ্চ ধারণ ক্ষমতার ৩/৪ গুন যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর থেকে ঢাকার দিকে গিয়েছে।

দুপুরে সরেজমিন লঞ্চঘাট গিয়ে দেখাগেছে, নির্ধারিত সময়ের আগে লঞ্চগুলোর স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী যাত্রী হলেও ছাড়ছে না। নির্দিষ্ট সময়ে প্রায় আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার যাত্রী নিয়ে ছাড়ছে লঞ্চগুলো। সকাল থেকে এমভি সোনারতরী, এমভি রফ রফ, এমভি ঈগল, এমভি আবে জমজম, এমভি প্রিন্স অব রাসেল, মেঘনা রানী ও বোগদাদিয়া-৭ অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর ঘাট ছেড়েছে।

লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি রুহুল আমিন জানান, চাঁদপুর-ঢাকা-চাঁদপুর নৌ-রুটে ভ্রমণ আরামদায়ক হওয়ার কারণে যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে এরুটে ২২টি বিলাসবহুল লঞ্চ যাতায়াত করে। চাঁদপুর জেলাসহ পাশ^বর্তী জেলা ে নোয়াখালী, ল²ীপুর ও শরীয়তপুর জেলার আংশকি মানুষ এখন এরুটে যাতায়াত করেন। ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে এখন কর্মমূখী মানুষগুলো নিজ গন্তব্যে ফেরার জন্য লঞ্চেই যাওয়া শুরু করেছেন।

ল²ীপুর থেকে আসা যাত্রী মোহাম্মদ নিয়াজ জানান, সিডিউল সময়ে ও নিয়মানুযায়ী লঞ্চগুলো আগের তুলনায় অধিক যাত্রী নিয়ে ছাড়ছে। প্রতি ঘন্টায় লঞ্চ রয়েছে। সে কারণে আমরা ইচ্ছে করেই ভীড়ের মধ্যে লঞ্চে উঠছি না।

ঢাকাগামী আরো কয়েকজন যাত্রী বলেছেন, কর্মস্থলে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে ঢাকায় যাবেন না। প্রয়োজনে পরবর্তী লঞ্চে যাত্রা করবেন। তারপরেও ঝুঁকি নিবেন না। কারণ সময়ের চাইতে জীবনের মূল্য অনেক বেশী।

চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে যাতে কোন লঞ্চ অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে না যেতে পারে, সে ব্যাপারে আমরা সর্তর্ক। তবে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ বেড়েছে রোববার থেকে। এ ঘাটের যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, স্কাউট সদস্যসহ আমাদের লোকজন সার্বক্ষণিক কাজ করছেন।

একই রকম খবর