চাঁদপুর ষোলঘর সপ্রাবি’র শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তীকে গলাকেটে হত্যা

চাঁদপুর খবর রিপোর্ট : চাঁদপুর শহরের ষোলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তী (৪৫) কে গলাকেটে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা।

রোববার (২১ জুলাই) বিকাল ৫টায় শহরের ষোলঘর ওয়াবদা কলোনীর জরাজীর্ন ৩ তলা ভবনে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষিকার বাড়ী জেলার শাহরাস্তি উপজেলায়। স্বামী অলক গো, স্বামীর সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলোনীতে বসবাস করতেন। তার ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে।

চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ জানায়, জয়ন্তী ঘটনার দিন স্কুল থেকে ছুটিতে ছিলেন। দুপুরের কোনো একসময় দুর্বৃত্তরা কোয়ার্টারে ঢুকে তাকে খুন করে পালিয়ে যায়। তার গলায় ধারালো ছুরি আঘাত ও হাতে আঘাতে দাগ রয়েছে। এদিন তার স্বামী অলক কুমার গোস্বামী প্রয়োজনীয় কাজে ঢাকায় অবস্থান করেছেন।

জয়ন্তীর মৃতদেহ উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। খুনের রহস্য উদঘাটে পুলিশ কাজ করছে। জয়ন্তীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার আলো গোস্বামী চাঁদপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি করা অবস্থায় শাহরাস্তির সন্তান জয়ন্তি চক্রবর্তীকে বিয়ে করে। তাদের দুই মেয়ে এক ছেলে রয়েছে। দুই মেয়ে ঢাকায় পড়াশোনা করার সুবাদে কয়েকদিন পূর্বে স্ত্রীকে রেখে স্বামী আলো গোস্বামী মেয়েদের দেখাশোনার জন্য ঢাকায় যায়।

ঘটনার দিন তার ছোট ছেলে ছাড়া কেউ বাসায় ছিল না। এছাড়া পানি উনয়ন বোর্ডের চতুর্থ তলা বিশিষ্ট বাসবভনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় ওখানে জয়ন্তী চক্রবর্তী ছাড়া আর কোন পরিবার বসবাস করে না। সেই সুযোগে হত্যাকারীরা জয়ন্তী চক্রবর্তীকে একা পেয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

ঘটনার পরেই চাঁদপুরের পুলিশ সুপার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, ডিএসবি, এনএসআই ও জেলা গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে ঘটনার সূত্র উদঘাটন করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে স্কুল শিক্ষিকাকে গলা কেটে হত্যা করার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। কি কারণে এ হত্যাকাÐ ঘটেছে তা কেউ বলতে পারছে না।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম উদ্দীন জানান, খুনের রহস্য উদঘাটে পুলিশ কাজ করছে। জয়ন্তির পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ওই শিক্ষিকা বাসায় একাছিলেন। তিনি শনিবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছেন। ঘটনার সময় তার বাসায় কেউই ছিলো না। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে।

এদিকে খরব পেয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাহেদ পারভেজ চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. মিজানুর রহমান জানায়, মূলত ঘটনাটি প্রথমে স্কুল থেকে জানার চেস্টা করা হয়। যে কেন জয়ন্তি চক্রবর্তি স্কুলে আসেননি ও তার ফোন রিসিভ হয়নি। পরে স্কুল ছুটির পর কয়েকজন শিক্ষিকা ও ছাত্র তার বাসায় আসে এবং তার রক্তাত্ত লাশটি পড়ে থাকতে দেখে। পরবর্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক্সেন সাহেব বিষয়টি জানতে পারে আমাদের বিষয়টি জানালে আমরা দ্রæত ঘটনাস্থলে আসি। আমাদের কয়েকটি টিম কাজ করছে। তবে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তার গলায় হয়তো ধারালো কোন বস্তু বা অস্ত্রদিয়ে আঘাত করা হয়েছে। দুপুরের নাগাদ এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওনার স্বামী আজ সকাল ৯ টায় কোন এক কাজে ঢাকায় গিয়েছে। তার বাসায় পাখা ও টিভি চলছে। আমরা টোটাল বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি, যে কেন এই ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে।

একই রকম খবর