বিশেষ প্রতিনিধি : চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে রোগীর কাছ থেকে এক চিকিৎসকের অর্থ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে রোগীর কাছ থেকে ৫ শ’টাকা ভিজিট নেওয়ায় ব্যাপক উত্তেজনা ও ডাক্তার,তার দপ্তরের এটেনডেন্স ও তার কার্যালয়ের অবস্থানরত দালালদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
অবশেষে কোন উপায় অন্তর না পেয়ে সিনিয়র কনসালটেন্ট মোঃ হাসানুর রহমান ভিজিটের ৫শ’ টাকা ফিরত দিয়ে হাসপাতাল থেকে কেটে পড়েন। ঘটনাটি ঘটেছে, গতকাল বুধবার দুপুরে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালের ২য় তলায় সিনিয়র কনসালটেন্ট মোঃ হাসানুর রহমান এর দপ্তরে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছে।
আহতদেরকে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহতরা হচ্ছেন, শাওন শেখ, মিলন ভুঁইয়া, হারুনূর রহমান, দালাল মিনু ও টিটু হোসেন ভুঁইয়া। হাসাপতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট মোঃ হাসানুর রহমান চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে বসে হারুনূর রহমান (৫৫) নামক রোগীর চিকিৎসাপত্র দেওয়ার পর ৫শ’ টাকা ভিজিট নেন। তিনি শুধু ভিজিট নিয়েই ক্ষান্ত হননি হাসাপতাল লাগোয়া আজাদ ডায়াগনস্টিকে গিয়ে রোগীকে কয়েকটি টেস্ট করতে বলেন।
কনসালটেন্ট মোঃ হাসানুর রহমানের দেওয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করাতে চার্জ আসে ১৭০০ টাকা। রোগীর পক্ষে এত টাকা পরিশোধ করা কষ্টকর হওয়ায় তিনি এলাকার পরিচিত জনদের ও আত্বীয় স্বজনদের খবর দেন। পরিচিত ও আত্মীয়রা চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে এসে চিকিৎসক সিনিয়র কনসালটেন্ট মোঃ হাসানুর রহমানের কাছ থেকে ভিজিট দেওয়া ৫ শ’ টাকা চাওয়ায় ডাক্তারের সাথে ব্যাপক বাকবিতন্ডা সৃস্টি হয় এবং এক পর্যায়ে ব্যাপক উত্তেজনা ও ডাক্তার, তার দপ্তরের এটেনডেন্ট ও তার কার্যালয়ের অবস্থানরত দালালদের সাথে হাতাহাতির মারাত্ব ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় রোগীর লোকেরা চাপ প্রয়োগ করলে অবশেষে কোন উপায় অন্তর না পেয়ে সিনিয়র কনসালটেন্ট মোঃ হাসানুর রহমান ভিজিটের ৫শ’ টাকা ফিরত দিয়ে হাসপাতাল থেকে কেটে পড়েন। এ ব্যাপারে ভোক্তভোগি রোগী শহরের রহমতপুর এলাকার বাসিন্দা হারুনুর রহমান (৫৫) গণমাধ্যমকে জানান, এক দালাল আমাকে হাসান ডাক্তারে কাছে নিয়ে আসে। আমাকে দেখার পর কাগজে বিভিন্ন ওষুধ ও টেস্টের কথা লিখে বলে ৫০০ টাকা ভিজিট দিয়ে যান। আমি বলি কিছু কম নেওয়া যায় না। ডাক্তার বলেন ভিজিট ৫শ’ টাকা আর টেস্টগুলো আজাদ ডায়াগনষ্টিকে গিয়ে করে নিয়ে আসুন।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার অফিসে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে আছেন বলে অফিস কর্তৃপক্ষ জানান। এ ব্যাপারে হাসপাতালের অর এমও ডাঃ এ এইচ এম সুজাউদ্দোলা রুবেল বলেন, সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট প্রেকটিস কেন করবে। কোন ধরনের অর্থ রোগীর কাছ থেকে সরকারি হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার নিতে পারে না। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়ে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ডাঃ হাসানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ২টায় কর্নফুলি হাসপাতালে যাচ্ছি আপনারা আসুন। অনেক সময় বসবার পর ওনি না আসার ফোন করা হলে তিনি বলেন, অনেক রোগী হাসপাতালে আসে কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছি কিনা তা আমার মনে নেই। একটু পরে আবার বলেন, না কোন রোগির কাছ থেকে আমি ভিজিট নেই নি।
উলেলখ্য, হাসাপতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট মোঃ হাসানুর রহমানের বিরুদ্ধে অতীতেও বিভিন্ন রোগী অভিযোগ করেছিলেন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও গণমাধ্যমের কাছে।
এ ডাক্তারের রুমের সামনে সব সময় দালালদের অনাগোনা চোখে পড়ে। এবং তিনি সব সময় সরকারি হাসপাতালে বসে রোগীর কাছ থেকে টাকা নেন ও আজাদ ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে বিভিন্ন টেষ্ট করতে পাঠান।