স্টাফ রিপোর্টার ॥ চাঁদপুর শহরের আলোচিত অধ্যক্ষ শাহিন সুলতানা ফেন্সি হত্যাকান্ডের আটক তার স্বামী অ্যাড. জহিরুল ইসলাম, ২য় স্ত্রী জুলেখা বেগম ও জুলেখার ভগ্নীপতি ইসরাফিলের জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করেছে আদালত। পুলিশের দায়েরকৃত ৫দিনের রিমান্ডের শুনানি শেষে অ্যাড. জহিরুল ইসলাম ও জুলেখা বেগমকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছে। অপর আসামী ইসরাফিলকে ১দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
রবিবার অতিরিক্ত চীফ জ্যুডিশীয়াল ম্যাজিস্ট্রেড সৈয়দ কায়সার মোশারফ ইউসূফের আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর মোঃ মহিউদ্দিন গত ২১জুন ৫দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। একই দিনে আসামীদের পক্ষে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. আব্দুল লতিফ শেখ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল আল মামুনসহ প্রায় দেড় শতাধিক আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন।
রবিবার রিমান্ড ও জামিনের শুনানির দিন ধার্য্য ছিল। সকাল থেকেই চাঁদপুর চীফ জ্যুডিশীয়াল আদালত প্রাঙ্গনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশি কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। সকাল ১১টায় অধ্যক্ষ শাহিন সুলতানা ফেন্সি হত্যাকান্ডের সন্দেহ ভাজন আটক ৩ আসামী অ্যাড. জহিরুল ইসলাম, ২য় স্ত্রী জুলেখা বেগম ও ইসরাফিলকে আদালতে হাজির করার কথা থাকলেও তাদেরকে হাজির করা হয় দুপুর ২টায়।
সরাসরি তাদেরকে জেলাখানা থেকে ২বারে এনে সরাসরি বিচারকের কাঠগরায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রথমে পুলিশের চাওয়া ৫দিনের রিমান্ডের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
রিমান্ড শুনানী শেষে আইনজীবীদের দায়ের করা জামিনের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় আসামী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. আব্দুল লতিফ শেখ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল আল মামুন, প্রবীণ আইনজীবী অ্যাড. ফজলুল হক সরকার, অ্যাড. রুহুল আমিন সরকার, অ্যাড. এ টি এম মোস্তফা কামালসহ প্রায় দেড় শতাধিক আইনজীবী অ্যাড. জহিরুল ইসলামসহ অপর ২আসামীর জামিন চেয়ে আদালতে দাঁড়িয়েছেন।
অপর এক সূত্রে থেকে জানা যায়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মহিউদ্দিন সন্দোহভাজন আটক আসামীদের মধ্য থেকে অ্যাড. জহিরুল ইসলামকে আদালতের মাধ্যমে পূর্বে ৫দিন রিমান্ড চেয়ে বিচারক ২দিনের রিমান্ড দিলে তাকে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরবর্তীতে ফেন্সি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য, পলাতক আসামীদের তথ্য সংগ্রহ, হত্যার কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার ও পায়ের ছাপ পর্যবেক্ষণের জন্য পুনরায় ৫দিনের রিমান্ড চাওয়া হয় অ্যাড. জহিরুল ইসলাম, জুলেখা বেগম ও ইসরাফিলের জন্য।
অপর দিকে চাঁদপুর জেলা আইনজীবীরা বলেন, যে বাসায় শাহিন সুলতানা ফেন্সি হত্যা হয়েছে সে বাসাটি অ্যাড. জহিরুল ইসলাম বসবাস করতেন স্বামী স্ত্রী হিসেবে। সেহেতু এ বাসাটিতে অ্যাড. জহিরুল ইসলামের হাজারো পায়ের ছাপ থাকতে পারে। তার অর্থ এই নয় যে অ্যাড. জহিরুল ইসলাম ফেন্সি হত্যাকান্ডে জড়িত।
আইনজীবীরা আরো জানায়, পুলিশ বিনা কারণেই একজন সিনিয়র আইনজীবীকে স্ত্রীর হত্যাকারী হিসেবে কোনো প্রমাণ ছাড়াই আটক করে একের পর এক রিমান্ড চেয়ে তাকে এ হত্যাকান্ডে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
২টি আবেদন শুনানীতে বিজ্ঞ বিচারক সৈয়দ কায়সার মোশারফ ইউসূফ তাৎক্ষণিক আদেশ প্রদান করেননি। বিকেলে আদেশ প্রদান করা হয় অ্যাড. জহিরুল ইসলাম ও জুলেখা বেগমকে জেলগেটে জিজ্ঞসাবাদ ও ইসরাফিলকে ১দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। আইনজীবীদের দায়ের করা ৩জনের জামিন আবেদন না-মঞ্জুরের আদেশ দেন।