আহম্মদ উল্যাহ : চাঁদপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দিবসটি উপলক্ষে সকালে শহরের শপথ চত্বরে জেলা প্রশাসন, জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও সামাজিক সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।
পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে শোক র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্থানীয় শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর-৩ আসনের সাংসদ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি।
তিনি বলেন, আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট। বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে কলঙ্কময়, বেদনার দিন। ১৯৭৫ সালের এ দিনে বাঙালি হারায় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ৭১ এর পরাজিত সক্তিরা, দেশ-বিদেশে চক্রান্তকারীরা আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা যত বড় ষড়যন্ত্র করুক নাকেন বাংলার মানুষ কখনোই পরাধীনতাকে মেনে নেয়নি। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারো ক্ষমতায় এসে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেই সময় চক্রান্তকারীরা আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অতএব আমাদের সাবধান হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, পরিকল্পিত হত্যাকান্ড থেকে বেঁচে যাওয়া জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই এখন বাংলাদেশ দ্রæত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এ উন্নয়ন দেখে এখন সারা বিশ^ বিস্ময় হয়ে তাকিয়ে আছে। বাংলাদেশের এ উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য তিনি সকলকে একত্রিত হয়ে কাজ করার জন্য আহবান জানান।
এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের নবাগত পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ মঈনুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
এদিকে ১৫ আগস্ট সকালে ডা. দীপু মনি এমপির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, জেলা পরিষদসহ সরকারি সকল দপ্তর, শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এর আগে সকাল ৮টায় আওয়ামী লীগ ও সকল অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হয়। যেখানে ডা. দীপু মনিসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
ডা. দীপু মনি এদিন চাঁদপুর সদরের বেশ ক’টি ইউনিয়ন এবং এলাকায় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিকেলে তিনি হাইমচর উপজেলার কর্মসূচিতে যোগ দেন।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগরে আয়োজনে শোক দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচি পলিত হয়েছে। স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনার্থে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিলো , সকাল সাড়ে ৬টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলনসহ দলীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন, কালোব্যাজ ধারণ, কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, কার্যালয়ে দিনব্যাপী কোরআনখানি ও মিলাদ মাহফিল, জেলা প্রশাসনের শোক র্যালীতে অংশগ্রহণের জন্যে সকাল ৮টার মধ্যে সকল ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীদের ব্যানারসহ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় সম্মুখে জমায়েত, প্রত্যেক মসজিদ, মন্দির, গীর্জাসহ অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা ও তবররুক বিতরণ, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম দুলাল পাটোয়ারী নেতৃত্বে দুপুর ১২টায় চাঁদপুর ক্লাবে বিশেষ মিলাদ দোয়া ও তবররুক বিতরণ, প্রত্যেক ওয়ার্ড, ইউনিয়ন এবং ইউনিটে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার, দোয়া অনুষ্ঠান ও তবররুক বিতরণ।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এসব কর্মসূচিতে জেলা, সদর উপজেলা ও শহর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের এসব কর্মসূচিতেও ডাঃ দীপু মনি এমপি উপস্থিত ছিলেন।