স্টাফ রিপোটার : আগামী সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হচ্ছে ১৮তম জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। এ টুর্নামেন্টে অংশ নিবে জেলার ৮ উপজেলার চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার দলগুলো।
জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা যায়, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে না হলেও দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হতে পারে জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত ১৭তম জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে মতলব উত্তর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা ও রানার্সআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে চাঁদপুর সদর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা।
গত কয়েক বছর ধরেই জেলা ক্রীড়া সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া দলগুলো (উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা)কে খেলোয়াড়দের খেলানোর ব্যাপারে কোটা তৈরি করা হতো। হয়তো এবারের ফুটবল টুর্নামেন্টে এর ব্যতিক্রম কিছু ঘটতে পারে।
এর আগে অংশ নেয়া দলগুলো স্থানীয় ৬ জন ও বহিরাগত ৫ জন ফুটবলারকে নিয়ে দল গুছিয়ে মাঠে নামতো। এবার হয়তো বহিরাগত ফুটবলারদের সংখ্যা বাড়তে পারে। আর এর কারণ হলো স্থানীয় ফুটবল ভক্তদের বিদেশী ফুটবলারদের খেলা দেখার ব্যাপারে আগ্রহ বেশি।
জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া বিভিন্ন উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা দলগুলোর কর্মকর্তারা অনেকটা ক্ষোভের সাথেই বলতে থাকেন, আমরা উপজেলা ফুটবল দলগুলোর জন্যে যখন স্থানীয় ফুটবলারদের সাথে আলাপ করি তখন তাদের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়।
জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে এর আগে ফুটবল টুর্নামেন্ট ও ফুটবল লীগের জন্যে জেলা শহরের ও বিভিন্ন উপজেলার স্থানীয় ফুটবলারদের নিয়ে বাছাই করে তাদেরকে খেলার সুযোগ দেয়া হতো। কিন্তু এতে অংশ নেয়া দলগুলোর কর্মকর্তাদেরকে বিভিন্ন চাপ সইতে হতো । দেখা যেতো জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ফুটবলার বাছাই করে লটারীর মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লাবকে দেয়া হতো এবং তাদের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে দেয়া হতো। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার আগ থেকেই বিভিন্ন ক্লাব তাদের সেই ফুটবলারদের নিয়ে অনুশীলন শুরু করেন। দেখা যেতো ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকেই অনুশীলনের সময় ফুটবলারদের আপ্যায়নসহ পারিশ্রমিক দিতেন। এরপর ম্যাচ অনুযায়ী বিভিন্ন ফুটবলারদের ক্যাটাগরি অনুযায়ী টাকা দিলে ওই ফুটবলাররা অনেক বেশি পারিশ্রমিক দাবি করেন । তবে এটা শুধু স্থানীয় ফুটবলরাগণই করেন। কিন্তু দেখা গেছে ঢাকার বিভিন্ন নামী-দামী ক্লাবে বিদেশী খেলোয়াড়দের খেলানো হয়। আর ওই সমস্ত ফুটবলারকে যদি চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার দলগুলোতে খেলাতে আনা হয় তাহলে স্থানীয় ফুটবলারদের চেয়ে নাকি তাদেরকে কম পারিশ্রামিক দিলেও তারা ভালো মানের খেলা উপহার দেন। এজন্যে বিভিন্ন উপজেলা দলগুলোর কর্মকর্তাদের দাবি, এবারের জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল উপ-কমিটির নেতৃবৃন্দ যেনো খেলোয়াড়দের কোটায় স্থানীয়দের চেয়ে বিদেশী ফুটবলারদের সুযোগ দেয় বেশি।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল উপ-কমিটির সম্পাদক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকারী কমিটির সদস্য, চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অন্তর্ভুক্ত ক্লাব বিষ্ণুদী ক্লাবের আহ্বায়ক, ক্রীড়া সংগঠক শাহির হোসেন পাটওয়ারীর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ঈদের পরেই আশা করি আমরা জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করবো। আমরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল উপ-কমিটির পক্ষ থেকে সহসাই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে আলাপ আলোচনা করবো। আশা করি ওই সভায় সিদ্ধান্ত হবে, কবে থেকে শুরু হবে ১৮তম জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবুর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন আগে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী কমিটির সভা হয়েছে। ওই সভায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান স্যার, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালসহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় খেলা চালানোর জন্যে বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফুটবল কমিটিতে রয়েছেন ফুটবল উপ-কমিটির সভাপতি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও ক্রীড়া সংগঠক ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপু, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার-সহ-সভাপতি ও আবাহনী ক্রীড়া চক্রের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, ফুটবল উপ-কমিটির সম্পাদক শাহির হোসেন পাটওয়ারী, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী কমিটির কর্মকর্তা আলহাজ্ব তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, হেলাল হোসাইন, শান্তসহ আরো কয়েকজন । আশা করি এই কমিটির মাধ্যমে জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল ও বিভিন্ন ফুটবল লীগসহ নানা ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করা যাবে। তবে এবার আমরা যা কিছুই করবো ফুটবল উপ-কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই করবো।
জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া গত বছরের বিভিন্ন উপজেলার ক’জন ফুটবল কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তারা জানান, আমরা প্রথমেই জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি সহ ফুটবল কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানাবো, প্রতিটি খেলাই যেনো বাইরের রেফারী দিয়ে পরিচালনা করা হয়। খেলা চলাকালীন জেলা ক্রীড়া সংস্থার অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ক্লাব কর্মকর্তা যেনো বিনা অনুমতিতে মাঠে প্রবেশ না করে। অনেক লোকজন আছে যারা জেলা ক্রীড়া সংস্থার অনুমতি না নিয়ে বিভিন্ন উপজেলার রুমে খেলা চলাকালীন গিয়ে বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন করে। সেজন্যে উপজেলা থেকে যে দলগুলো যাবে তাদেরকে একটু নিরাপত্তা দিতে হবে। উপজেলা দলগুলোতে স্থানীয় যে ফুটবলারগণ খেলার সুযোগ পাবে তারা যেনো দলের প্রতি মনোযোগী হয়ে খেলাধুলা করে। আর আমাদের আরো দাবি থাকবে, খেলা চলাকালীন আমাদের যে প্রাপ্য সেটা যেনো সময় মতো পরিশোধ করে দেয়।