জনকল্যাণ বাজার সমিতির সভাপতি’র বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চাঁদপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ রঘুনাথপুর গ্রামের জনকল্যাণ বাজার ও সমিতির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সমিতির সভাপতি আব্দুর রব শেখ এর বিরুদ্ধে। এই ব্যাপারে চাঁদপুর আমলী আদালতে ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে জনকর‌্যাণ বাজার সমিতি নামীয় একটি সমিতি গঠন করে জনকল্যাণ বাজারের ভূমি খরিদ করে দোকান পাট উত্তোলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জনকল্যাণ বাজার সমিতি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে মৃত নোয়াব আলী শেখের ছেলে আব্দুর রব শেখকে নির্বাচিত করা হয়।

তখন ১শ ৮ জন সদস্য এই সমিতিতে ছিল। জনকল্যাণ বাজার সমিতির নামে ভূমি খরিদ ও দোকান পাট উত্তোলন করার লক্ষ্যে ্এবং সদস্যদের দোকান বরাদ্দক্রমে ভূমি সহ দোকান বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ্আব্দুল কাদির শেখ এর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, মাওলানা মনছুর আহমেদ ঢালীর কাছ থেকে ৩ লাখ ৬০ টাকা, মোঃ নজরুল ইসলাম মাঝির কাছ থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, মো: রিপন মাঝির কাছ থেকে ৫ লাখ ২০ টাকা, মো: নজু মাঝির কাছ থেকে ১ লাখ ২০ টাকা, মো: সুরুজ মাঝির কাছ থেকে ১ লাখ টাকা, মো: শুক্কুর ঢালীর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা এমনিভাবে দোকান বরাদ্দের নাম করে অন্যান্য লোকদের কাছ থেকে ২৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা সহ সর্বমোট ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

১ বছরের মধ্যে এই টাকা দিয়ে জনকল্যাণ বাজারে জনকল্যাণ বাজার সমিতি নামে ভূমি খরিদ করে উত্তোলন করা হবে। অন্য লোকজনের নামে ভূমি ও দোকান বরাদ্দ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

১ বছরের মেয়াদের মধ্যে জনকল্যাণ বাজার সমিতির নামে ভূমি খরিদ বা দোকান উত্তোলন না করে এলাকা হতে ্আব্দুর রব শেখ গা ঢাকা দেয়।

ভুক্তভোগীরা কিছুদিন পর জানতে পারে আব্দুর রব শেখ বাড়িতে ্এসেছেন। তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কালক্ষেপন শুরু করেন। এলাকায় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা ২০১৭ সালের ২৬ জুন বিকেলে শালীশ বৈঠকে বসেন।

তখন রব শেখ শালিশে উপস্থিত হয়ে জনকল্যাণ বাজারের জমি খরিদ ও দোকান উত্তোলনের করার কথা বলে ৫০ লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়টি শিকার করেন। শালিশীদের কাছে ৬ মাসের সময় নেন এবং ব্যর্থ হলে যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল তা ফেরত দিবে বলে ওই শালিশে মৌখিকভাবে অঙ্গীকার করেন।

শালিশদের কাছ থেকে নেয়া ৬ মাসের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও সমিতির নামে জনকল্যাণ বাজারে কোন ভূমি খরিদ করে নাই। বরং যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল সেই টাকাও ফেরত দেয়নি। গত ৭ জানুয়ারি আব্দুর রব কে দেখতে পেয়ে পাওনাদারগণ টাকা ফেরত চাইলে কোন টাকা নেয় নাই বলে অস্বীকার করে।

জনকল্যাণ বাজারে সমিতির নামে ভূমি খরিদ করা ও দোকান বরাদ্দের কথাও অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে সমিতির সদস্য আনোয়ার হোসেন শেখ গত ২৫ মার্চ চাঁদপুর আমলী আদালতে আব্দুর রব শেখ, হেদায়েত উল্লাহ শেখ, ফারুক শেখ ও ছাদেক শেখকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। একটি সূত্র থেকে জানা যায়, এই টাকা দিয়ে রব শেখ ৫৯ শতাংশ সম্পত্তি জনকল্যাণ বাজারে ক্রয় করেন।

এর মধ্যে বেশ কিছু সম্পত্তি তিনি বিক্রি করে দেন। বর্তমানে ৩৩ শতাংশ জমি রয়েছে। ওই সম্পত্তিতে ২য় তলা একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এই ভবনটি নিজের নামে আত্মসাত করার পায়তারা করছেন। ভুক্তভোগীরা জানান, ২০০৫ সালে যখন এই সমিতির কার্যক্রম শুরু করা হয় তখন ১শ ৮ জন সদস্য ছিল।

আর বর্তমানে মাত্র ৪৪ জন সদস্য রয়েছে। আরও জানা যায়, জমি ভরাট করার জন্য যাদের কাছ থেকে মাটি আনা হয়েছিল তাদেরকে ২ টাকা ৫০ পয়সা দরে দাম দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই টাকা ও মাটির মালিকদের এখন পর্যন্ত পরিশোধ করেননি।

প্রথমে যারা এই সমিতির সদস্য হয়েছিল তারা ৩শ টাকা করে চাঁদা দিয়ে সদস্য হয়েছিল। এরপর ৫শ থেকে শুরু করে ২/৩ হাজার টাকায় আব্দুর রব শেখ সদস্য তৈরি করেছিলেন। বর্তমানে তিনি জনকল্যাণ সমিতির নামে যে টাকা নিয়েছেন তা আত্মসাতের পাঁয়তারা করছেন বলে সমিতির সদস্যরা অভিযোগ তুলেছেন।

একই রকম খবর

Leave a Comment