চাঁদপুর খবর রির্পোট : জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম বলেছেন চাঁদপুরের উন্নয়নে মেধাবীরা ভূমিকা রাখবেন। আমাদের সন্তানদের মেধার স্বীকৃতি তাদের আরও বড় অর্জনের পথ দেখাবে। তারা চাঁদপুরের উন্নয়নে একসময় বড় ভূমিকা রাখবেন। তিনি বলেন, মেধার স্বীকৃতি না পেলে মেধা বিকশিত হয় না।
সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা কালে এসব কথা বলেন। ফোরামের সভাপতি মিজান মালিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যানদের মধ্যে বক্তৃতা করেন দৈনিক ইত্তেফাকের সিটি এডিটর আবুল খায়ের এবং ব্যাংকার ফেরদৌসী আলম।
অভিভাবকদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, এনটিভি অনলাইনের সিনিয়র সাংবাদিক এম এ নোমান, দৈনিক অবজারভারের সিনিয়র সাংবাদিক সোমা আক্তার, কালচারাল রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ। ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার পলাশের সঞ্চালনায় এসময় ফোরামের সদস্যের সন্তানদের মধ্যে ১৫ জনকে বৃত্তি হিসেবে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ফেরদৌসী আলম বৃত্তিপ্রাপ্ত সকলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, আমি চাঁদপুরের সন্তান হিসেবে এই ফোরাম বা এই পরিবারেরই সদস্য। এই বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে আমরা আমাদের সন্তানদের স্বীকৃতি দিচ্ছি, তাদেরকে উৎসাহ প্রদান করছি। তাদের মেধার স্বীকৃতি দিয়ে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছি, তাদের প্রসংসা করছি। এটা একটা বড় ব্যাপার। আসলে জাতি হিসেবে আমরা মরনোত্ত্বর স্বীকৃতি প্রদানে অভ্যস্ত।
এমন অবস্থায় আমাদের সন্তানদের মেধার স্বীকৃতি যে আমরা দিতে পারছি, এটিই আমার কাছে একটি মূখ্য বিষয়। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এর ফলে আমাদের সন্তানদের মনে অনেক বড় অনুপ্রেরণার জায়গা তৈরি করবে। সাইফুল আলম বলেন, কেউ মরে গিয়ে যদি নোবেল পুরষ্কারও পায়, তাতে তার কোনো লাভ নেই। কিন্তু জীবিত থাকা অবস্থায় যদি কোন পুরষ্কার পাওয়া যায়, সেটি অনেক বড় অর্থ বহন করে। এই প্রাপ্তির অনেক বড় একটা বার্তা আছে। আরেকটি বিষয় হলো, আমাদের সন্তান, যারা আজ স্বীকৃতি পেলো, তারা ভবিষ্যতে অনেক বড় স্বীকৃতি অর্জন করতে পারবে বলে মনে করি।
তিনি বলেন, চাঁদপুরের মেধাবী অনেকগুলো মুখ রয়েছে, যাদের শরীর থেকে এখনো চাঁদপুরের মাটির গন্ধ পাওয়া যায়, সেই মুখগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে এদেশকে পরিচালনা করছে, এতে আমরা গর্বিত।
সাইফুল আলম আরো বলেন, ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের অভিষেক অনুষ্ঠানে চাঁদপুরের অনেক মেধাবীদের মুখ দেখা গেছে। তারাই পারেন চাঁদপুরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে। চাঁদপুরের উন্নয়নে প্রয়োজন নিজ গ্রামের প্রতি মায়া ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি। নদী ভাঙ্গন চাঁদপুরের অনেক বড় একটি সমস্যা। এর ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। আশ্রয়হীন হয়ে চাঁদপুর ছেড়ে অন্যত্রে চলে যাচ্ছে অনেকে। চাঁদপুরের অনেক সম্ভাবনা থাকার পরও তুলনামূলক অগ্রগতী নেই। এক্ষেত্রে আমরা সাংবাদিকরা চাঁদপুরের উন্নয়নের স্বার্থে ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। অনেক গণমাধ্যমে চাঁদপুরের মেধাবী সাংবাদিকরা প্রধান প্রধান দায়িত্ব পালন করছেন। তারা চাইলে চাঁদপুরের জন্য অনেক কিছু করার সুযোগ আছে। এখন কেবল একত্রি হয়ে কাজ করার পালা।
গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আমরা চাঁদপুরের সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরবো, এটিই আমাদের বড় কাজ। কেবল রিপোর্ট করা নয়, রিপোর্টের ভিত্তিতে তা কতোটুকো বাস্তবায়িত হলো সেদিকেও নজর রাখতে হবে আমাদের।
অনুষ্ঠানে দৈনিক ইত্তেফাকের নগর সম্পাদক আবুল খায়ের বলেন- চাঁদপুরের অনেক মেধাবী ব্যক্তিরা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন আছেন। এই সাংবাদিক ফোরামের মাধ্যমে চাঁদপুরে জেলাকে যেনো একটি মডেল জেলা হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পরি, সেটিই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। এই ফোরামে দল মত নির্বিশেষে চাঁদপুর জেলার সকল সাংবাদিকরা একতাবদ্ধ হয়ে থাকবো এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মিজান মালিক বলেন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য আমি সকলের সহযোগীতা কামনা করছি। ইতোমধ্যে চাঁদপুরের উন্নয়নে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রমে হাত দিয়েছি। আমাদের এই চেষ্টা অব্যহত থাকবে। একতাবদ্ধ হয়েই আমরা চাঁদপুরকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবো।