স্টাফ রিপোটার্র : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘ ১৬ বছর পর নির্বাচন হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড পর্যায়ে সাধারণ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছেন মোট ৫৫ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, সাধারণ সদস্য পদে ৪১ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এরই মধ্যে এই ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণের জন্য সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মামলা ও নির্বাচিত চেয়ারম্যানের মৃত্যুজনিত কারণেই গত ১৬ বছর পর ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়নি।
২০০৩ সালে ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের কয়েক মাস পর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ তুলেন পরিষদের সদস্যরা। স্থানীয় সরকার বিভাগেও তারা অনাস্থা দিলে চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই নিয়ে মামলাও হয়।
দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে থাকেন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সোহেল খান। সবশেষ ৮ বছর আগে উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন আব্দুল লতিফ প-িত। গত বছর তিনি মারা যান। দীর্ঘ সময় গড়িয়ে আজ বৃহস্পতিবার সেখানে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এই নির্বাচনে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেয়নি। চেয়ারম্যান পদে ৫ প্রার্থীর সবাই সরকারদলীয় সমর্থক। এদের মধ্যে নৌকা প্রতীক পেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন সাইফুল আলম সোহেল খান। অন্য চারজন হচ্ছেন আলমগীর হোসেন রিপন (আনারস), আকবর হোসেন পাটওয়ারী (চশমা), শফিকুর রহমান (মোটরসাইকেল) এবং রেজাউল ইসলাম (টেলিফোন)।
এদের মধ্যে সাইফুল আলম সোহেল খান গত ১৬ বছর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ছিলেন। নানা কারণে বিভিন্ন সময় তিনিই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তাকে নিয়ে ভোটারদের মধ্যে রয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। অন্যদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী আলমগীর হোসেন রিপন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তার বাবা নুর মোহাম্মদ মিয়া দীর্ঘদিন ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। ফলে বাবার ইমেজ কাজে লাগিয়ে ভোটযুদ্ধে বিজয়ী হতে চান আনারস প্রতীকের রিপন। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে চেয়ারম্যান পদ নিশ্চিত করতে চান নৌকা প্রতীকের সোহেল খান।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে মোট ভোটার হচ্ছেন ১৭ হাজার ৬৩০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৮৮৯৬ এবং নারী ভোটার ৮৭৩৪ জন। শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের জন্য ৯টি কেন্দ্রের জন্য পর্যাপ্ত জনবল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। এদিকে, মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে প্রচারণা শেষ হয়েছে। গতকাল বুধবারের মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রকিব জানান, ভোটের দিন প্রতিকেন্দ্রে একজন উপ-পরির্দশক ও সহকারী উপপরির্দশকের নেতৃত্বে অস্ত্রধারী চারজন কনস্টেবল নিয়োগ করা হবে। এ ছাড়া একজন পুলিশ পরিদর্শকের নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়ে প্রতিকেন্দ্রে জন্য স্ট্যান্ডবাই ও মোবাইল টিম, প্রতি ৩টি কেন্দ্রের জন্য একজন অতিরিক্ত পুলিশের সুপারের নেতৃত্বে আলাদা টিম, পৃথকভাবে র্যাব, বিজিবি এবং সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাড়তি সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ওসি আবদুর রকির আরো জানান, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা, জাল ভোটে শাস্তি প্রদানের জন্য তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের দিন সার্বক্ষণিক অবস্থান করবেন।