চাঁদপুর খবর রিপোর্ট : চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে প্রশাসনের অভিযানে হামলা চালিয়েছে জেলেরা। হামলায় চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান এবং ফরিদগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান আহত হন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড় ১০টার দিকে হাইমচর উপজেলার কাটাখালি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় জড়িত ও জাটকা নিধনের অপরাধে ১৭ জেলেকে আটক করা হয়ছে। এছাড়া ২০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়।
পুলিশ জানায়, রাতে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশ জেলা প্রশাসনসহ অভিযান পরিচালনার সময় নদীতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। সংঘবদ্ধ জেলেদের হামলার সময় নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ড ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ দিকে এই ঘটনায় ১৭ জেলেকে আটক করা হয়েছে। রাতেই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এদের মধ্যে ১৩ জনকে ১ বছর করে কারাদণ্ড ও বাকি ৪ জনকে বয়স বিবেচনায় অর্থদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল ইসলাম।
এছাড়া নিধনকৃত জাটকা বিকিকিনির জন্য নদীপাড়ে গড়ে উঠা অবৈধ ৫টি আড়ৎ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সাজা প্রাপ্তরা হলেন : দিদার(১৯), দেলু সৈয়াল (২৮), জাকির(১৮), মাসুম (২৭), সাইফুল ইসলাম (৩০), তাজুল ইসলাম (২৩), শাহীন(২৫), রোমান (১৯), নাজির বেপারী (২৫), আ. হান্নান খান (৩০), আবুল বাসার (২৫) ও সুজন হোসেন(২৮)।
মৎস্য অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আহরণকৃত জাটকা বিক্রি করায় ৫টি আড়ৎ শুক্রবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে জেলা মৎস্য বিভাগ ও পুলিশ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংশ করে দিয়েছে।
চাঁদপুর নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ আবু তাহের জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত ১ পর্যন্ত চাঁদপুর নৌ-সীমানায় টানা অভিযানে পদ্মা ও মেঘনা নদীর মিনি কক্সবাজার খ্যাত পর্যটন স্পট, গোয়ালিয়র চর, রাজরাজেস্বর ইউনিয়নের পদ্মা তীরবর্তী পুরো এলাকা, শরীয়তপুর সীমান্ত সংলগ্ন কাটাখালি, সাইলুরের ছাই ফ্যাক্টরি এলাকা, আনন্দবাজার, টিলাবাড়ি এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ৬৩ টি ইঞ্জিন চালিত মাছ ধরার নৌকা আটক করে ব্যবহারের অনুপযোগী করে ধ্বংশ করা হয়। শুক্রবার ৫ টি মাছের আড়ৎ আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
এ সময় পৌনে ৪ লাখ মিটার কারেন্ট জাল আটক করে পুড়িয়ে ফেলা হয়, আটক ১ মণ জাটকা গরীব দুস্থ্যদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান এর নেতৃর্ত্বে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর নৌ-থানার ওসি আবু তাহের, কোষ্টগার্ড কমান্ডার আবদুল মালেক, ফরিদগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, নৌ পুলিশ ও কোষ্টগার্ড এবং নৌ বাহিনীর সদস্যবৃন্দ ।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানায়, রাজ রাজেস্বর ইউনিয়নের কাটাখালি ও সাইলুরের ছাই ফ্যাক্টরির নিকট জেলেরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে অভিযানে অংশ নেয়া টিমের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে আত্মরক্ষার্থে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড কর্তৃক ৬ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ১ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়ে। জেলেরা পাল্টা আক্রমন করতে গিয়ে ব্যাপক ইট-পাটকেল ছোঁড়ে। ছোঁড়া ইটের আঘাতে ফরিদগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয় ও এবং আমার গলায় ইটের নিক্ষেপে আঘাতপ্রাপ্ত হই।