এমএম কামাল : চাঁদপুরের নবাগত পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির বলেছেন, সন্ত্রাসী যে কোনো দলেরই হোক, তাকে ছাড় দেয়া হবে না এবং থানায় মামলা ও জিডি করতে কোনো টাকা লাগবে না। এ জন্যে প্রত্যেকটি থানায় চার্টার টানাতে হবে। কারো কোন তদবীর আমার কাছে চলবে না। আমি চাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক জন সাধারণ মানুষ আমার কাজে আসবে এবং মন খুলে কথা বলবে, আমি তাদেরকে আইনি সহায়তা করবো।
মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে চাঁদপুরের নবাগত পুলিশ সুপার জিহাদুল কবিরের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চাঁদপুরের পুলিশ এখন থেকে গরীবের জন্য কাজ করবে। জেলার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যা যা প্রয়োজন তাই করা হবে। আমার নীতি হবে যে কোন ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাবে এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আগের পুলিশ সুপার মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে কাজ করেছেন, আমি সেগুলো অব্যাহত রাখব। কারণ আমি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পছন্দ করি। জনগণের সেবা দেয়ার জন্য আমার কার্যালয় সব সময় উন্মুক্ত থাকবে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, সাংবাদিক ও পুলিশের কাজের উদ্দেশ্য একই। মানুষের সেবা করা। তবে কাজের ধরণ আলাদা। আপনাদের সাথে সু-সম্পর্ক রেখেই কাজ করা হবে। আমি চাই আপনারা আমার কাজের সমালোচনা করেন। কারণ আমি কোন ফেরেশতা নই। আমার কাজের ত্রæটি না উঠে আসলে অনেক কিছু চাপা পড়ে থাকবে। তখন মূল কাজটাই হবে না। সমস্যার স্থানে সমস্যা থেকেই যাবে।
তিনি বলেন, চাঁদপুর জেলা পুলিশকে স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে নেওয়া হবে। জনগনের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। চাঁদপুরের অনেক সুনাম শুনেছি, চাঁদপুর একটা শান্তির শহর, আর এ শান্তির শহরে সব সময় শান্তি অব্যাহত রাখার জন্য সকলে সহযোগীতা করা হবে।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সাথে সব সময় পুলিশের মধুর সম্পর্ক থাকে। আর এ মধুর সম্পর্ক অক্ষুন্ন রেখেই সাংবাদিকদের সাথে চলাচল করা হবে। সাংবাদিকদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগে ত্রæটি রাখা হবেনা। সাংবাদিকরা সব সময় পুলিশকে তথ্য দিচ্ছে। সে তথ্যগুলো পুলিশ কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বিদায়ী পুলিশ সুপার শামছুন্নাহারের কাজগুলোকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া হবে। আমি যে কোন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রচন্দ করি। আমার কার্যালয় সবার জন্য সব সময় উন্মক্ত থাকবে। জেলার সর্বাস্তরের মানুষের কথা আমি শুনবো, শুনে তাদের যথাযথ আইনগত সহায়তা প্রদান করা হবে। আমার একটাই লক্ষ, তা হচ্ছে শুধু কাজ।
নবাগত পুলিশ সুপার আরো বলেন, চাঁদপুরের মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা কঠোর ভাবে করা হবে। মানুষ যাতে সব সময় সরাসরি পুলিশের সহায়তা নিতে পারে, সে জন্য থানার সকল প্রকার দালালী বন্ধ করা হবে। কোন ভাবেই ঘাতক ট্রাক্টর চাঁদপুরের চলাচল করতে পারবেনা। পূর্বের মত ট্রাক্টার চলাচল সম্পন্ন নিষিদ্ধ থাকবে। মাদক নির্মূলে পুলিশ পূর্বের ন্যায় আরো সক্রিয় ভাবে কাজ করবে। মাদক ব্যবসায়ীদের কঠোর ভাবে নিমূল করা হবে। চাঁদপুরে কোন ভাবে ইভটিজিং করা চলবেনা। যাদের নামে ইভটিজিংয়ের কথা শুনা যাবে, তাদেরকে আইনের আওয়াতায় নিয়ে আসা হবে। মামলা করতে কোন প্রকার টাকা লাগেনা, প্রতিটি থানায় এ ধরনের লেখা রাখতে হবে। মানুষ যাতে কোন ভাবে হয়রানি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।
তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষের কাজে সমালচনা করতে হবে। কাজের সমালোচনা করলেই কাজের ভুলত্রæটি বেরিয়ে আসবে। পূর্বের মত নারী ও শিশু নির্যাতন সহয়তা সেল খোলা থাকবে। সাধারণ মানুষের বিচারের বিসস্ত স্থান নারী ও শিশু নির্যাতন স্থানে পূর্বের ন্যায় আসতে পারবে। শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন আমার সাথে সবাই স্বাক্ষৎ করতে পারবে।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় ছিলেন মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, কাজী শাহাদাত, শাহ্ মো. মাকছুদুল আলম, গোলাম কিবরিয়া জীবন, শহীদ পাটওয়ারী, বিএম. হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মিলন, রহিম বাদশা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক সোহেল রুশদী, জি.এম.শাহীন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ল²ন চন্দ্র সূত্রধর, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন লিটন, আলম পলাশ, কোষাধ্যক্ষ এম.এ. লতিফ, প্রচার সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্যাহ, কার্যকরী সদস্য শাহাদাত হোসেন শান্ত, ফারুক আহম্মেদ, সাংবাদিক পার্থনাথ চক্রবর্তী, কেএম মাসুদ, মিজান লিটন, শেখ মুসহিন প্রমূখ। সভায় সাংবাদিকরা জেলার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা উন্নয়নে পুলিশের কার্যক্রম আরো জোরদার করার দাবী জানান।