স্টাফ রিপোর্টার : ইলিশের পোনা (জাটকা) রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার। এ সময় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় সকল ধরণের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ছিলো। নিষেধাজ্ঞা শেষে বুধবার (৩০) এপ্রিল দিনগত রাত ১২টার পর থেকে ইলিশ আহরণে নেমেছেন জেলেরা। রাত ও দিনে মেঘনা নদীতে বিচরণ করে রূপালি ইলিশের দেখা পাননি। এখনো কিছু কিছু জেলে ১০ ইঞ্চির নীচে জাটকাই আহরণ করছেন।
বুধবার (১ মে) বিকেলে সদর উপজেলার হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় মৎস্য আড়তে গিয়ে দেখা যায় একজন ব্যবসায়ীর আড়তে ছোট সাইজের কয়েকটি ইলিশ। সবগুলোর একত্রে দাম উঠেছে ৫শ’ টাকা। এভাবে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পুড়ো আড়তে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ বিক্রি হয়েছে ১৬হাজার ৫শ’ টাকা।
হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার জেলে মো. ইসমাইল মৃধা বলেন, জাল, নৌকা ও ৯জন জেলে সকালে নেমেছেন মেঘনায়। মাত্র ছোট সাইজের ৭টি ইলিশ ও অন্যান্য মাছসহ বিক্রি করেছেন ২হাজার ২শ’ টাকা। তাদের জ¦ালানিসহ খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। নদীতে মাছ নেই। দীর্ঘ দুই মাস অবসর থাকার পরে ইচ্ছা না থাকা সত্বেও নদীতে নামতে হয়েছে। এই মৌসুমে ইলিশ খুবই কম পাওয়া যায়।
হরিণা ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বেপারী, মো. ইউসুফ ও কালু হাওলাদার বলেন, ১০ থেকে ১২টি আড়ৎ থাকলেও মাত্র ৩জনই আজকে মাছ ক্রয় করেছি। কারণ মাছের আমদানি নেই। ইলিশ নেই, আনছেন পোয়া, পাঙ্গাসের পোনাসহ অন্যান্য মাছ। তাও খুবই সামান্য। মাছ না পাওয়ার কারণে অনেক জেলে নদীতেই নামছেন না। নদীতে মাছ থাকলে প্রতিদিন কমপেক্ষ একজন ব্যবসায়ী ২ থেকে আড়াই লাখ টাকার মাছ বিক্রি করে।
চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় মৎস্য আড়ৎ বড় স্টেশন মাছঘাটের ব্যবসায়ী মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখনকার প্রায় ৫২টি আড়তে আনুমানিক ৫মন ছোট সাইজের ইলিশ আমদানি হয়েছে। এতে আমাদের শ্রমিকের খরচও উঠবে না। কিছুক্ষণ পরে পরে জেলেরা মাছ নিয়ে আসেন তাও খুবই সামান্য।
তিনি আরো বলেন, অভয়াশ্রমকালীন সময়ে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে নৌ-পুলিশের সাথে ঘন্টা হিসেবে চুক্তি করে জাটকাসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করেছেন। এসব কারণে নদীতে এখন মাছের দেখা মিলছে না।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মাসুদুল হাসান বলেন, দুই মাসের অভয়াশ্রম শেষ হয়েছে। বুধবার রাত থেকেই নদীতে নেমেছেন জেলেরা। ইলিশ প্রাকৃতিক সম্পদ নদীতে থাকলে জেলেরা আহরণ করতে পারবেন। তবে বর্ষা মৌসুমে ইলিশের আমদানি বাড়বে।