ফরিদগঞ্জে ছেলে ধরা আতঙ্ক নিয়ে একি কাণ্ড!

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি : বিগত কয়েকদিন ধরে উপজেলা জুড়ে ছেলে ধরা আতঙ্ক বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকসহ বর্তমানে সর্বত্র একই আলোচনা।

গ্রামের প্রতিটি পরিবার তাদের ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। কেউ বিশ^াস করছেন, কেউ আবার গুজব বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন।

তবে ফকির যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষা করেন তাদের কপাল পুঁড়েছে। অভিভাবকদের সাথে সাথে আতংকে আছেন বিভিন্ন এলাকার অপরিচিত লোকজন।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ১৫নং রুপসা উত্তর ইউনিয়নের গাব্দেরগাঁও গ্রামের নারিকেল তলায় সন্দেহভাজন অপরিচিত একজনকে ধরে স্থানীয়রা বেদম প্রহার করে। খবর পেয়ে সংবাদকর্মীরা সেখানে ছুটে যান।

গিয়ে জানতে পারে লোকটি নারিকেল তলায় গাছের নিচে বসে রয়েছে। লোকজন তার কাছে জানতে চায় বাড়ি কোথায়? লোকটির জবাব রাঙ্গামাটি। এই একটি শব্দই বলতে পারে লোকটি। তার নাম কি তাও বলতে পারছে না সে। পরে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ এসে লোকটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

এর আগে গত ৯ জুলাই উপজেলার একই ইউনিয়নের দক্ষিণ গাব্দেরগাঁও গ্রামে চৌকিদার বাড়ির বাচ্চু চৌকিদারের ৫ বছরের মেয়ে মিমকে সন্ধ্যার আগ থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় মসজিদ গুলোর মাইকিং করলে সংবাদটি মহুর্তে মধ্যে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। শতশত মানুষ রাস্তায় নেমে আসে এবং মেয়েটিকে খুঁজতে থাকে। অবশেষে মেয়েটিকে ঐ বাড়ির ইটের স্তপের ভিতর টিনেচাপার ভিতর অচেতন অবস্থায় খুঁজে পায় লোকজন।

ছেলে ধরা চক্র এলাকায় ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং শিশু কিশোরদের তুলে নিয়ে হত্যা করে মাথা কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ছে উপজেলার সর্বত্র। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবকমহল। প্রাইমারি স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনগুলোতে সর্তকবস্থা জারি করা করা হয়েছে। তবে পুলিশ প্রশাসন বলছে, এটা নিছক গুজব।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি চক্র প্রচার করছে ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সেখানে অন্তত এক লাখ শিশু-কিশোরের কল্লা (মাথামুন্ড) দিতে হবে।

সে মতে ৪২টি দল সারাদেশে শিশু কিশোরদের কল্লা সংগ্রহের কাজ করছে।’ এমনই গুজব ছড়িয়ে পড়ছে উপজেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে এবং কিন্ডারগার্টেনগুলোতে। গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির পরিমান আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে।

অনেক অভিভাবক ভয়ে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। অথচ ছেলে ধরা বা কল্লা কাটার কোনো ঘটনাই উপজেলার কোথায়ও ঘটেছে এ রকম তথ্য পাওয়া যায়নি।

অপরিচিত লোক দেখলেই মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এতে বিপাকে পড়ছে ফকির ও ফেরিওয়ালারা। গৃহস্থরা অপরিচিত ভিক্ষুক দেখলে ভিক্ষা না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুর রকিব উদ্দিন বলেন,‘সত্যিকার অর্থে এটা গুজব। ল²ীপুরে এ গুজব খুব বেশী। পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একটি পরিপত্র তৈরি করেছে। এ উপজেলাবাসীকে বলবো গুজবে কান না দেয়ার জন্য। আমিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দিবো।’

ফরিদগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার মমতা আফরিন বলেন,‘এটা নিছক একটি গুজব। যা আদৌ সত্য নয়।’

একই রকম খবর