প্রেস বিজ্ঞপ্তি : চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষীপুর মডেল ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড রামদাসদী গ্রামে নদী ভাঙ্গন রোধে শহর রক্ষা বাঁধ ঘেষে টাঙ্গাইলের আহছান উল্লাহ মাষ্টার নামে জনৈক ব্যক্তি লিকলেইম কোম্পানীর নাম করে এই স্থানে ফসলী জমি ও পুকুর ভরাট করে বালু ¯ুÍপকরে শহর রক্ষা বাঁধকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
শুধু তাই নয়, বালুর স্তুপ এতটাই উঁচু হয়েছে যে, পরিবেশ বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। আশে পাশের বাড়ির লোকজন এই বালুর কারণে বসবাস করতে পারছে না। হুমকির মুখে পড়ছে ফসলী জমিগুলো। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। গতকাল ব ুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় হাজারো নারী পুরুষের সমন্বয়ে মেঘনা নদীর পাড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালণ করা হয়।
কর্মসূচিতে এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান, এই বালুর স্তুপের কারণে শহর রক্ষা বাঁধের অনেক সিসি বøক ধেবে গেছে। বালুর কারণে পরিবেশ হয়ে পড়ছে বিপর্যস্ত। আমরা চাই এখান থেকে এই অবৈধ বালুর মজুদ ও ব্যবসা যেন দ্রæত সরিয়ে নেয়া হয়। তারা আরও জানায়, আমরা এ বিষয়ে ১০নং লক্ষীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খানের কাছে অভিযোগ করেছি।
আমাদের রামদাসদী গ্রামে মেঘনা নদীর তীরে গত কয়েকদিন যাবৎ নদী ভাঙ্গন রক্ষা বাঁধ ঘেষে বালুর স্তুপ দেয়া হচ্ছে। এই বালুর স্তুপে আশে পাশের বাড়িতে বালু থেকে পানি প্রবেশ করছে। রক্ষা বাঁধের সিসি বøক দেবে যাচ্ছে। বাতাসের সাথে বালু উড়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে লিখিত আবেদন করা হয়।
সকাল সাড়ে ৯টায় রামদাসদী গ্রামের যে স্থানে বালুর স্তুুপ তৈরি করা হয়েছে সেখানে হাজারো নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে চাঁদপুর-হাইমচর নদীর তীরের স্থায়ী বাঁধ ও পরিবেশ দূষণ রক্ষার্থে নদীর তীরে অবৈধভাবে বালুর স্তুপ করণসহ অনুমোদনবিহীন অবকাঠামো নির্মাণের বিরুদ্ধে ১০নং লক্ষীপুর মডেল ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উজ্জ্বল হোসেন বলেন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কোন কাজ এখানে করা যাবে না। বাতাসে বালু উড়ে এখানে ক্ষতি হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ওয়াহেদুর রহমান ভূইয়া জানান, পুরাণবাজার ইব্রাহিমপুর ও সাখুয়ার এটি প্রজেক্ট। ২০১২ সালে ৫ হাজার ৮শ ৩০ মিটার প্রজেক্টের কাজ প্রথম ধাপে সমাপ্ত হয়।
নদী ভাঙ্গা গড়ার খেলা আমরা রিপেয়ারিং করি। যারা এখানে বালু ভরাটের কাজ করছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। ২০১৫ সালে ৫ হাজার ৮শ ৩০ থেকে ৬ হাজার ১শ মিটার কাজ শেষ হয়। জনগণ তার সুফল ভোগ করছে। যদি এই প্রজেক্টের কাজ না হত তাহলে নদী ভাঙ্গনের ফলে মূল বেরিবাঁধ ধ্বংস হয়ে যেত। লিকলেইন কোম্পানীর ম্যানেজার নবীন খান জানান, এই কাজটির জন্য তাদের অণুমতি রয়েছে। আর সেই অনুমতির কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।
আমরা ২/১ দিনের মধ্যে সেই কাগজপত্র চাঁদপুরের প্রশাসনকে দেখাতে পারব। চাঁদপুরে অবস্থানরত লিকলেইন কোম্পানীর কেয়ারটেকার মোঃ শরিফুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, সে কোন সদোত্তর দিতে পারেনি। স্থানীয়রা জানায়, গত ২৮ মার্চ থেকে এখানে সিরাজগঞ্জ যমুনা ঘাট থেকে বালু এনে স্তুপ করা হচ্ছে। আর এই বালু এখানে পাইন্ডিং করে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। স্থানীয়রা জানায়, এ কোম্পানীর লোকেরা এখানে শিল্প কারখানা করার কথা বলে ফসলী জমি ও পুকুর ৩ বছরের জন্য পোষানীতে নেয়। বিনিময়ে প্রতি একর সম্পত্তি এক বছরের জন্য মাত্র ১ হাজার ৬শ টাকা করে দিয়েছে।
যারা জমি পোসানীতে দিয়েছে লতিফ খান, আলম খান, আব্দুল হক, গোলাপ খা, সুমন খা সহ আরো অনেকে অতি লোভের কারণে লিকলেইন কোম্পানীর কাছে তাদের জমি তুলে দিয়েছে। তারা জানায়, শিল্প কারখানা করার কথা বলে এই প্রতিষ্ঠানের লোকজন তাদের কাছ থেকে পোসানীতে জমি নিয়েছে। পরবর্তীতে দেখা যায়, কোম্পানী না করে এখানে বালুর ব্যবসা শুরু করেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি দ্রæত এই স্থান থেকে এই অবৈধ বালুর ব্যবসা যেন সরিয়ে নেওয়া হয়।