হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সুখী, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত, উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি আমরা।
জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। সুজলা-সুফলা বাংলাদেশের দিকে বিশ^ এখন অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে। কারণ, তারা যে বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে দেখেছিলো। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সে বাংলাদেশ এখন মাথা উঁচু করে বিশে^র মানচিত্রে জ¦লজ¦ল করছে। প্রতিবছরই কোনো না কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মাইলফলক স্পর্শ করছে। আমরা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের মাসে আরো একটি অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করলাম।
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপন হবে আজ রাত ২টা ১৪ মিনিট থেকে ৪টা ২১মিনিট এর মধ্যে। এই লেখাটি যতক্ষণে পাঠকের কাছে পৌঁছাবে ততক্ষণে মহাকাশের কক্ষপথে চলে যাবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে মহাকাশে ভেসে বেড়াবে এ স্যাটেলাইটটি। বাংলাদেশের জন্যে এটি হবে এক অনন্য যাত্রা। কেননা, এর মধ্য দিয়ে মহাকাশ জয়ের গৌরব অর্জন করলো বাংলাদেশ। পূরণ হলো জাতির জনকের আরো একটি স্বপ্ন। আর কোটি কোটি বাঙালির জন্যে এ এক পরম পাওয়া।
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন নিয়ে উদ্বেলিত সমগ্র জাতি। এ পর্যন্ত পৃথিবীর মাত্র ৫৬টি দেশ স্যাটেলাইটের মালিক হতে পেরেছে। বাংলাদেশ ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইটের মালিক দেশগুলোর অভিজাত ক্লাবে যুক্ত হবে। গত রাতে নিশ্চয়ই কোটি কোটি বাঙালি আনন্দ ও উত্তেজনা নিয়ে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন দেখেছে। আর বিশ^ নেতৃবৃন্দ দেখেছে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছানো এক অহবান বাংলাদেশকে।
জাতীয় একটি দৈনিক পড়ে জানলাম, ‘মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের অবস্থান হবে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। এ স্যাটেলাইট তৈরিতে খরচ ধরা হয় ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও বাকি ১ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এ ঋণ দিয়েছে বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসি। তবে এ পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হয়েছে ২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা।’
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশের ইন্টারনেট ও প্রযুক্তিগত সেবার উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটবে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কেও আগাম ধারণা নিতে পারবে বাংলাদেশ। ফলে দুর্যোগ মোকাবেলা করা সহজ হবে এবং ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করার ক্ষেত্রেও এ স্যাটেলাইটটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব হবে। স্যাটেলাইটটির সক্ষমতা বিক্রি করে এ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের কারণে বাংলাদেশের ভাবমূতি যে বহির্বিশে^ আরো উজ্জ্বল হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বঙ্গবন্ধু চাইতেন বাঙালিরা পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। তাঁর আদর্শ ধারণ করেই দেশ পরিচালনা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে আজ মহাকাশে যাত্রা করলো বাংলাদেশ এবং লাল সবুজের পতাকা। এটি নিঃসন্দেহে প্রত্যেক বাঙালির জন্যে অনেক গৌরব ও আনন্দের। আমরা গর্বিত ও আনন্দিত। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের মানসকন্যা, জননেত্রী ও দেশরত্ন শেখ হাসিনা এবং আমাদের প্রান প্রিয় নেতা সজিব ওয়াজেদ জয়কে। আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আরো অনেকদূর এগিয়ে যাবে।এই আমাদের প্রত্যাশা।
‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’।
অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ হাসান খান : সদস্য, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ।