চাঁদপুর খবর রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে প্রিপেইড মিটারে রিচার্জে গ্রাহক হয়রানি। চরম অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে শহরবাসী। আবার কেউ কেউ অভিযোগ করেন, প্রিপেইড মিটার লাগানোর পর মিটারে টাকা রিচার্জ করতে গেলে বলা হয় বিল বকেয়া আছে টাকা রিচার্জ হবে না, আগে বকেয়া বিল পরিশোধ করুন। নিয়মিত বিল দেয়ার পরও বকেয়া এমন কথায় জনগণ বিস্মিত।
গ্রাহকরা জানান, সম্পূর্ণ বকেয়া বিল পরিশোধ করার পরে প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হয়। কিন্তু এর পরেও বকেয়া কী ভাবে হয় তার উত্তর খুঁজে পাচ্ছে না ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
বিদ্যুৎ বিভাগের মিটার রিডাররা প্রতি মাসে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডিং আনত এবং কম্পিউটার এ বিল তৈরী গ্রাহকদের দেয়া হতো, গ্রাহকরা সে অনুযায়ী ব্যাংকে বিল জমা দিত, বকেয়া বিল থাকলে সেটা পরের মাসে বিলের সাথে সংযুক্ত হতো।
গ্রাহকদের এখন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে চাঁদপুরের কর্মকর্তাগণ বলছেন মিটারে পুরোনো ইউনিট জমা আছে তার বিল দিতে হবে, না হলে মিটারে টাকা রিচার্জ হবে না। এজন্য দায়ি কে ? বছরের পর বছর যে সমস্ত মিটার রিডার মিটার রিডিং নিয়েছে তারা এভাবে ইউনিট জমিয়ে রেখেছে, অথবা মিটার রিডাররা গ্রাহকদের সাথে কোনো ধরনের সমঝোতা করে বিল দিয়েছে।
আবার দেখা গিয়েছে মিটার রিডাররা গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি না গিয়ে ঘরে বসেই বিদ্যুৎ বিল তৈরী করেছেন, অনেক মিটার রিডার আবার নিজের ব্যক্তিগত সহকারি রাখতেন, তাদেরকে মিটার রিডিং সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করতেন। এভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবে কাজ করেছেন। তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ভূমিকার কারনে জনগণ এখন হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন।
হঠাৎ অনেক টাকার বিল পেয়ে গ্রাহকরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ছেন। বিদ্যুৎ বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা অনিয়ম, অনৈতিক কাজের মাধমে বিত্তবৈভব এর মালিক হবেন আর কিছুদিন পর পর জনগণকে হয়রানি করবেন এটা হতে পারে না। বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীর জন্য জনগণের এই হয়রানি বন্ধ করা হউক। এমনিতেই প্রিপেইড মিটার লাগানো নিয়ে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিলো, পরবর্তীতে সরকারের এই উদ্যেগকে স্বাগত জানিয়ে জনগণ এর ব্যবহার মুখী হয়ে পড়ে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের হঠাৎ বকেয়া বিলের তুগলকি কান্ড দেখে গ্রাহকগণের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
গ্রাহকদের কথা হল বিল বকেযয় থাকলে তা অবশ্যই দেব, তা একসঙ্গে চাপিয়ে না দিয়ে কিস্তি করা হউক, পাশাপাশি যে সব মিটার রিডারদের কারণে আজ এই ভোগান্তি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হউক। এসব অসাধু বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুদকের আওতায় আনা হউক।
এদিকে চাঁদপুর শহরের বাসা-বাড়িতে যে প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করছে তাদেরকে ঠিক মত মিটার কার্ডে রিচার্জ দিতে পারছে না বিদ্যুৎ অফিস। মোবাইলে বাহির থেকে রিচার্জ করা গেলেও সার্ভেয়ারের সমস্যার কারণে তা সেবা নিতে পারছেনা শহরবাসী। তবে চাঁদপুর বিদ্যুৎ অফিসে দীর্ঘ লাইন দাঁড়িয়ে থেকে মিটারে রিচার্জ করলেও ৫টা পর আর লাইন দিয়েও কাজ হচ্ছে না। ফলে অসহায় হয়ে পরে ভুক্তভুগি গ্রাহকরা। এ নিয়ে গত কয়েকবার স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা গুলোতে সংবাদ প্রকাশ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
এ বিষয়ে চাঁদপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী এস এম ইকবাল হোসেন দৈনিক চাঁদপুর খবরকে জানান, বিদ্যুৎ অফিস থেকে প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রিপেইড মিটার কার্ডে রিচার্জ করা যায়। তবে আগের বিল পরিশোধ না করলে প্রিপেইড মিটার কার্ডে রিচার্জ করা যাবে না।
তবে তিনি বাহির থেকে মোবাইলে প্রিপেইড মিটার কার্ডে রিচার্জের বিষয়ে বলেন, বুধবার (২৭ জুন) বিকেল ৫টা পর্যন্ত সার্ভার সমস্যার কারণে মোবাইলে রিচার্জ করা বন্ধ ছিল। বিকেল ৫টার পর বাহিরে রিচার্জ আবার শুরু হয়েছে।