স্টাফ রিপোর্টার : নাট্য অভিনেতা শান্ত সূত্রধর ভারত সরকারের শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য ভারত যাচ্ছেন। ভারতীয় সরকারের ICCR ( Indian Council For Cultural Relation) স্কলারশিপ নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূণ্য জন্মস্থান জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে অবস্থিত রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন।
তিনি সেখানে অাগামী তিন বছরের জন্য বিএ অনার্স (ড্রামা) অধ্যয়ন করবেন। শান্ত অাগামী এক জুলাই সকাল ১০টায় ঢাকা শাহজালাল অান্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের বিমানে ভারত পৌঁছাবেন। শান্ত হাসান অালী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সুনামের সাথে এসএসসি এবং চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি অভিনয় এবং সংগীতের প্রতি তার খুব অাগ্রাহ ছিল। তাই তার বাবা বিদ্যালয়ে পড়া অবস্থাতেই চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী নাট্য সংগঠন “বর্ণচোরা নাট্যগোষ্ঠী” ও জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ভর্তি করিয়ে দেন। মীর মোশাররফ হোসেনের ঐতিহাসিক “জমিদার দর্পণ” নাটকের মাধ্যমে তার নাটকের যাত্রা শুরু হয়। বরেণ্য নাট্য অভিনেতা ও নির্দেশক শরীফ চৌধুরীর মাধ্যমে তার নাটকের হাতেখড়ি।
এছাড়াও বিশিষ্ট নাট্য নির্দেশক ও অভিনেতা শুকদেব রায় ছিলেন তার নাটকের অন্যতম একজন শিক্ষক।
সে চাঁদপুর এবং ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মঞ্চনাটকে অভিনয় করে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। তিনি বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারিভাবে অভিনয়ের উপর অনেক পুরষ্কার অর্জন করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটকগুলো হচ্ছে, জমিদার দর্পণ, লালননামা, গিট্টু, বিচ্ছু, অামরা তিনজন, প্রিয়দর্শন, ছি! এবং চোরে চোরে মাসতুতো ভাই।
এছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছেন। বিশিষ্ট নির্মাতা অধ্যাপক রুপক রায়ের হাত ধরেই তার টেলিভিশন নাটকের যাত্রা শুরু। তার উল্লেখযোগ্য টেলিভিশন নাটকগুলো হল, সেঞ্চুরি অাকাশ ছোঁয়া, জলদেবী, মন্দ মধুর হাওয়া, এখনও মেঘ কাটেনি, এছাড়াও তিনি মাদক ও ইভটিজিং বিরোধী ডুকুড্রামা “শুভসকাল” এ অভিনয় করে বেশ সুনাম অর্জন করেন।
তিনি বাংলাদেশ এবং নরওয়ের বরেণ্য শিল্পীদের থেকে অভিনয়ের উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। তিনি প্রথমে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সংগীতে ভর্তি হন। সেখানে তার সংগীতে হাতেখড়ি হয় বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী মৃণাল সরকারের কাছে। সেই সাথে অনিতা কর্মকারের কাছ থেকে উচ্চাঙ্গ সংগীতে শিক্ষা গ্রহন করেন।
এরপর তিনি চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী সংগীত বিদ্যাপীঠ “সংগীত নিকেতন” থেকে সংগীতের উপর স্বপন সেনগুপ্ত, সত্য চক্রবর্তী এবং দিলীপ দাস এর কাছ থেকে শিক্ষা নেন। শান্ত চাঁদপুর সরকারি কলেজ থিয়েটারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির রেপোটারী নাট্যদলের সদস্য। এছাড়াও তিনি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ( টিঅাইবি) চাঁদপুরের একজন ইয়েস সদস্য। তিনি পড়াশোনা শেষে ভবিষ্যতে নাট্যকলা বিষয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি একজন অভিনেতা এবং নির্মাতা হতে চান।
তার বাবা বিশিষ্ট সাংবাদিক চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক ভোরের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর। তার মাতা পান্না রাণী সূত্রধর একজন সুগৃহিনী। তার একমাত্র ছোটবোন অর্পিতা সূত্রধর (নীলা) মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী।
তারা দীর্ঘদিন থেকে চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার এলাকায় বসবাস করে অাসছেন। তার গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার ৩নং কল্যাণপুর ইউনিয়নের দাসাদী গ্রামে। তিনি যেন সফলতার সাথে লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরে অাসতে পারেন সেজন্য সকলের কাছে দোয়া এবং অাশীর্বাদ কামনা করেছে তার পরিবার।