প্রেস বিজ্ঞপ্তি : স্পেনের মাদ্রিদে আসন্ন কপ-২৫ জলবায়ু সম্মেলন: জলবায়ু অর্থায়নে দূষণকারী শিল্পোন্নত দেশসমূহের প্রতিশ্রতির বাস্তব অগ্রগতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবিতে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চাঁদপুর ।
২৮ নভেম্বর ২০১৯ বিকেল সাড়ে ৪টায় অঙ্গিকার পাদদেশে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে। মানববন্ধনে সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে সনাক সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ মোশারেফ হোসেন বলেন, জলবায়ূ ইস্যুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার জন্যই আমাদের আজকের এই মানববন্ধন। পৃথিবীর তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি প্রতিনিয়ত জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে সরকারের উন্নয়নের ধারা ব্যহত হচ্ছে।
তাই সরকারের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হলে আমাদের সবাইকে জলবায়ু ইস্যুতে একত্রিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি সকলকে যার যার অবস্থান থেকে জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থাকার এবং এক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তনে এগিয়ে আসার আহবান জানান। তিনি তাঁর বক্তব্যে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের প্রতিশ্রুতির বাস্তব অগ্রগতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবী জানান। তিনি মানববন্ধনে উপস্থিত হওয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।
মানববন্ধনে সনাকের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে আমাদের দেশের বহু ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন, আপনারা জানেন কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আমাদের দেশে আঘাত হেনেছে। এতে বেশি ক্ষতি হয়েছে সুন্দবনের। তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের পাশেই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হওয়ার ফলে সুন্দরবনের ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে এবং পরিবেশের বিপর্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজ দেশে খাদ্য সংকট এবং পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। তিনি আরও বলেন, জলবায়ু ইস্যুতে সরকারের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে জলবায়ুর ক্ষতি মোকাবেলায় একযোগে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, পলিথিনের ব্যবহার আমাদের পরিবেশকে দিন দিন বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ডাকাতিয়া নদী থেকে শুরু করে চাঁদপুর শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া এসবি খালে ময়লা আবর্জনা ও পলিথিন ফেলার ফলে পরিবেশের বিপর্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের এই মানববন্ধনের দাবি হচ্ছে জলবায়ু দূষণকারী কর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রদান নীতি বিবেচনা করে ঋণ নয়, শুধু সরকারি অনুদান, যা উন্নয়ন সহায়তার ‘অতিরিক্ত’ এবং ‘নতুন’ প্রতিশ্রুতিরবিপরীতে প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করা। তিনি মানববন্ধনে উপস্থিত হওয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।
টিআইবি’র রাজন চন্দ্র দে’র সঞ্চালনায় মানবন্ধনে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন, জীবনদীপের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. বিনয় ভূষণ মজুমদার, সনাকের সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল মালেক, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাসুদেব মজুমদার, সনাকের জলবায়ু বিষয়ক জন-অংশগ্রহণ কমিটি (সিসিপি)-এর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংকার মজিবুর রহমান, টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার মোঃ মাসুদ রানা, স্বজন সদস্য মোঃ আবু সালেহ, তারুণ্য অগ্রদূতের সাবেক সভাপতি ভিভিয়ান ঘোষ, ইয়েস গ্রুপের দলনেতা দীন মোহাম্মদ দীলরাজ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও শুদ্ধাচার নিশ্চিতে সুশীল সমাজ সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অন্তর্ভুক্ত করে সমতা-ভিত্তিক প্রতিনিধিত্বমূলক কার্যত্রম করার আহ্বান জানান। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিযোজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে চাহিদা মাফিক জলবায়ু অনুদান ভিত্তিক তহবিল প্রদানে একটি সময়াবদ্ধ রোডম্যাপ প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়ন করার অনুরোধ করেন।
তারা আরও বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনকে লক্ষ্য করে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করে, সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানান। বক্তাগণ প্যারিস চুক্তির আলোকে প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নের সুনির্দিষ্ট, বাস্তবভিত্তিক, সুনির্দিষ্ট রুপরেখা প্রস্তুত এবং সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান। এধরনের একটি মানববন্ধন আয়োজন করার জন্য তারা সনাককে ধন্যবাদ জানান।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সনাক সদস্য এবিএম নজরুল আমিন সাজু, মোঃ আব্দুস সামাদ দেওয়ান, মোঃ আলমগীর হোসেন পাটওয়ারী, অ্যাড. পলাশ মজুমদার, চাঁদপুর সেন্ট্রাল ইনার হুইল ক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ মাহমুদা খানম, চাঁদপুর সেন্ট্রাল ইনার হুইল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিতু আক্তার, চাঁদপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর রেবেকা সুলতানা বকুল, স্বজনের সহ-সমন্বয়ক জেসমিন আক্তার, স্বজন সদস্য কাজী আব্দুর রহমান, মুহম্মদ ফরিদ হাসান, টিআইবি’র অ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজার (এফএন্ডএ) তরফদার মোহাম্মদ রিজওয়ান, চাঁদমুখের সাধারণ সম্পাদক এইচএম জাকির, তারুণ্যের অগ্রদূতের সাধারণ সম্পাদক নুরুল কাদেরসহ সদস্যবৃন্দ, রোটার্যাক্ট ক্লাব অব চাঁদপুর সেন্ট্রালের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদসহ সদস্যবৃন্দ, রোটার্যাক্ট ক্লাব অব চাঁদপুর সেন্ট্রাল গার্ডেনের সদস্যবৃন্দ, সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ, ইয়েস ও ইয়েস ফ্রেন্ডস্ গ্রুপের সদস্বৃন্দ ও টিআইবির কর্মীবৃন্দ।